আচমকা নবান্নে সৌরভ, গোপন বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর সাথে
লন্ডনে ফেলুদা কিংবা আরবদেশে (সন্তু ও) কাকাবাবু ফেলে নতুন রহস্য-রোমাঞ্চের খোঁজে বাঙালির আলোচনায় এখন নবান্নে সৌরভ। রহস্য বলে রহস্য! উৎসুক সংবাদমাধ্যমের নাগাল এড়িয়ে ভিআইপি গেট দিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নবান্নে ঢুকে যাওয়া, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক এবং পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী ও সৌরভ দু’তরফেই মুখে কুলুপ আঁটা, এগুলো কীসের ইঙ্গিত, তা নিয়ে ভেবে কুল পাচ্ছে না বাংলার রাজনীতি ও ক্রীড়ামহল।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় এমন একজন ব্যক্তিত্ব, খেলা ও রাজনীতি (বিনোদনের ক্ষেত্রটা না হয় বাদ দেওয়া গেল) উভয় জগতেই তিনি সমান প্রাসঙ্গিক। একদা টিম ইন্ডিয়ায় রাজনীতির শিকার হয়ে নেতৃত্ব খোয়ানোর পর এখন তিনি স্পোর্টস পলিটিক্সের সুবাদে ভারতীয় ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক। সংসদীয় রাজনীতি থেকে দূরে থেকও তিনি রাজ্যের শাসক দলের সম্ভাব্য প্রধান কাঁটা এবং প্রধান বিরোধী দলের তুরুপের তাস।
রাজনীতির গণ্ডির বাইরের এমন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হঠাৎ বোর্ডের সদর দফতর ছেড়ে কেন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে রাজ্যের প্রশাসনিক হেড কোয়ার্টারে হাজির, তার উত্তর খুঁজতে চাওয়া স্বাভাবিক।
সমীকরণ মেলানোর চেষ্টা চলছে বেশ কয়েকটা ক্ষেত্রে। অদূর ভবিষ্যতে যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে সৌরভের আগ্রহ থাকতে পারে, তাঁর মধ্যে অন্যতম হতে পারে আইসিসি চেয়ারম্যান পদের হাতছানি, আইপিএল আয়োজন, সরকারের চিন বিরোধী অবস্থানে স্পনসরশিপ চুক্তির পুনর্বিবেচনা এবং বিসসিআই সভাপতি হিসেবে মেয়াদ পুনর্নবিকরণ। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে দুশ্চিন্তার বিষয় হতে পারে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচন, যেখানে সৌরভকে অনেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বঙ্গ বিজেপির সম্ভাব্য মুখ হিসেবে দেখছেন।
আইসিসি এবং বিসিসিআই সভাপতি সংক্রান্ত বিষয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সৌরভের আলোচনা অর্থহীন। ইডেনে আইপিএল আয়োজন নিয়ে এই বৈঠক হতে পারে। তবে রাজনৈতিক মহলের আগ্রহ এটা জানার জন্য যে, এই বৈঠকের সঙ্গে রাজ্য রাজনীতির কোনও যোগাযোগ আছে কিনা।
আপাতত মুখ্যমন্ত্রী বা সৌরভ, কেউই বৈঠক নিয়ে মুখ খোলেননি। যতক্ষণ না দু’তরফে কোনও ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, রহস্যের কিনারা করা সম্ভব নয় উৎসুক বাঙালির পক্ষে। শুধু একটা কথা ভোলা উচিত নয় যে, একদা এই নবান্ন থেকেই সিএবি সভাপতি হিসেবে পথ চলা শুরু হয়েছিল সৌরভের।