বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

হিন্দুধর্মের প্রচারক হলেও সর্বধর্ম সমন্বয়ে বিশ্বাসী ছিলেন স্বামীজী

July 4, 2020 | 2 min read

“মনে কর, এক বাপের অনেকগুলি ছেলে — ছোট বড়। সকলেই ‘বাবা’ বলতে পারে না। কেউ বলে ‘বাবা’, কেউ বলে ‘বা’, কেউ বা কেবল ‘পা’। যারা ‘বাবা’ বলতে পারলে না, তাদের উপর বাপ রাগ করবে নাকি? না, বাপ সকলকেই সমান ভালবাসবে।”

“লোক মনে করে, আমার ধর্ম ঠিক; আমি ঈশ্বর কি বস্তু বুঝেছি, ওরা বুঝতে পারে নাই। আমি ঠিক তাঁকে ডাকছি, ওরা ঠিক ডাকতে পারে না; অতএব ঈশ্বর আমাকেই কৃপা করেন, ওদের করেন না। এ-সব লোক জানে না যে, ঈশ্বর সকলের বাপ-মা, আন্তরিক হলে তিনি সকলকেই দয়া করেন।”

শ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের এই সর্বধর্ম সমন্বয়কে আক্ষরিক অর্থে সারা বিশ্বের কাছে তুলে ধরেছিলেন স্বামীজী। স্বামী বিবেকানন্দ জগতের সামনে এই প্রেমের ধর্মের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে প্রচার করেছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত বেলুড় মঠেও দেখা যায় এক অদ্ভুত সমাহার। বেলুড় মঠের রামকৃষ্ণ মন্দির রামকৃষ্ণ ভাব-আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। এই মন্দিরটি হিন্দু, ইসলামী, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান স্থাপত্যের মিশ্রণে নির্মিত একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য নিদর্শন।

নারীশক্তির মহিমা প্রচারের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ ১৯০১ সালে বেলুড় মঠে দেবী দুর্গার সঙ্গে সঙ্গে কুমারী পুজোর প্রবর্তন করেছিলেন। তবে তারও তিন বছর আগে স্বামীজি প্রথম কুমারী পুজো করেন কাশ্মীরে গিয়ে এক মুসলমান শিকারা চালকের মেয়েকে দেখে তাঁর দেবী বলে মনে হয়েছিল বলে।

এছাড়া, বড়দিন উপলক্ষে সন্ধ্যায় আলোর রোশনাইয়ে সেজে ওঠে বেলুড় মঠ৷ ২৫ ডিসেম্বরের আগের দিন সন্ধ্যায় বিশ্বের সমস্ত রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনেই যিশু বন্দনা ও বাইবেল পাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়৷ প্রতি বছর যিশুখ্রিস্টের জন্মদিনের আয়োজন করে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন। যীশুর ছবির সামনে রাখা হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি, মিষ্টি ও কফি৷ বাইবেল পাঠ ও প্রাক ক্রিসমাস উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান বেলুড় মঠে।

এদিন সন্ধ্যা আরতির পর শুরু হয় যীশুর আরাধনা। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের মন্দিরে প্রভু যীশুর ছবি বসানো হয়। মোমবাতি, ফুল দিয়ে ছবি সাজানো হয়েছিল। ছবির সামনে দেওয়া হয় কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি, মিষ্টি। ক্যারলের মাধ্যমে পুজোর সূচনা হয়। ইংরেজি ও বাংলায় বাইবেল পাঠ করা হয়। উপস্থিত ছিলেন বেলুড় মঠের সন্ন্যাসীরা। পরে যীশুর জন্মকাহিনী পাঠ করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Swami Vivekananda, #secularism, #interfaith harmony

আরো দেখুন