ফালাকাটা উপনির্বাচনের জন্য তৃণমূলের প্রস্তুতি তুঙ্গে, ময়দানে নেই বিজেপি
ফালাকাটা উপনির্বাচনকে পাখির চোখ করে ময়দানে নেমে পড়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। এই আসন ধরে রাখতে তৃণমূলের নানা তৎপরতা দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি, এই কেন্দ্রের বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত বনমন্ত্রী রাজীব বন্দোপাধ্যায় ফালাকাটায় এসে দলীয় কর্মীদের সক্রিয়তার সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন। তারপর শাসক দলের ব্লক ও অঞ্চল কমিটিতে ব্যাপক রদবদল হয়। সব কমিটিতে নতুন মুখ নিয়ে আসা হয়।
ব্লক স্তরের পর এখন অঞ্চল স্তরের বৈঠক নিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে শাসক দল। এদিকে বিজেপিকে এখনও সেভাবে ময়দানে নামতে দেখা না যাওয়ায় গেরুয়া শিবিরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গত লোকসভা নির্বাচনের নিরিখে বিজেপির কাছে জয়ী আসন হল ফালাকাটা। তারপরও উপনির্বাচনের ক্ষেত্রে পদ্ম শিবিরের নীরবতা নিয়ে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের মতো ঢাক ঢোল পিটিয়ে পালটা কর্মসূচি করেন না। তাঁদের সাংগঠনিক নিয়মেই জোরদার কর্মসূচি চলছে।
গত ৩১ অক্টোবর বিধায়ক অনিল অধিকারি মারা যাওয়ায় ফালাকাটায় উপনির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই উপনির্বাচনকে যথেষ্ট মর্যাদার লড়াই হিসেবে দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। ফালাকাটা বিধানসভা কেন্দ্রকে বিশেষভাবে দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় দায়িত্ব দিয়েছে রাজীব বন্দোপাধ্যায়কে। নির্বাচনের সম্ভাবনা থাকায় সম্প্রতি রাজীববাবু ফালাকাটায় এসে নরমে গরমে দলের নেতাকর্মীদের নানা বার্তা দেন। যাঁরা দল ভাঙিয়ে ব্যবসা করছেন, তাঁদেরকে দল থেকে দূরে থাকার কড়া বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি কর্মীদের ঝাপিয়ে পড়ার নির্দেশ দেন তিনি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত লোকসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রে বিজেপির থেকে ২৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে যায় তৃণমূল। তাই উপনির্বাচনে যেভাবেই হোক, এই কেন্দ্র ধরে রাখতে চাইছে শাসক দল। এজন্যই দলের তৎপরতা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে।
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ফালাকাটা ব্লক সভাপতি সন্তোষ বর্মন বলেন, ‘এখন প্রতিদিন একাধিক কর্মসূচি চলছে। আগামী রবিবার থেকে অঞ্চল ভিত্তিক দলীয় বৈঠকগুলি শুরু হবে।’
দলের লকডাউন পরবর্তী অবস্থান নিয়ে তিনি বলেন, ‘লকডাউনের পর আমাদের জনসমর্থন অনেক বেড়েছে। আমরা বহু মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।’ তাই উপনির্বাচন হলে দলের ফলাফল ভালো হবে বলেই তাঁর দাবি। এদিকে বিজেপির প্রচার এখনও সেভাবে শুরু হয়নি। বিজেপিকে কটাক্ষ করে সন্তোষ বাবু বলেন, ‘ওঁরা তো মানুষের পাশে দাঁড়ায়নি। তাই প্রচার করবে কোন ভরসায়।’ তবে লকডাউনের প্রোটোকল ভেঙে শাসক দলের কর্মসূচি হচ্ছে বলে বিজেপির অভিযোগ। দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘তৃণমূলের কোনও কর্মসূচির জন্য পুলিশের অনুমতি লাগে না। তাই লকডাউনের প্রোটোকল ভেঙে তৃণমূলের একের পর এক দলীয় কর্মসূচি হচ্ছে। তৃণমূলের পাল্টা কোনও কর্মসূচি করার দল বিজেপি নয়। আমাদের সাংগঠনিক নিয়মে ধাপে ধাপে সব কর্মসূচি চলছে। প্রোটোকল মেনে দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর চিঠি নিয়ে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। ভার্চুয়াল মিটিংও চলছে।’ এদিকে বিজেপির অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সন্তোষ বর্মন বলেন, ‘করোনার যাবতীয় প্রটোকোল মেনেই আমাদের কর্মসূচি চলছে।’