রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

সোমনাথ কান্ডে রাজনৈতিক সংকটে গেরুয়া শিবির

July 6, 2020 | 2 min read

সময় যতই গড়াচ্ছে ততই সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া শিবিরে। একের পর এক অভিযোগ ধেয়ে আসছে তাঁর বিরুদ্ধে। সেই সব অভিযোগ সামাল দিতে দিতে এখন কার্যল নাজেহাল দশা পদ্ম শিবিরের। পুরভোট হোক বা বিধানসভা নির্বাচন, কোনটাই খুব বেশি বাকি নেই। ঠিক এইরকম সময়ে একজন দলীয় নেতাকে ঘিরে দল বারবার অস্বস্তিতে পড়ায় এবার কড়া পদক্ষেপই নিতে চলেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশ অনুযায়ী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করতে পারে। কারন সোমনাথের বিরুদ্ধে এখন যে সব ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠছে তা সামলানো এই নির্বাচনমুখী বাংলায় রাজ্য বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সোমনাথ বিদায় এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলেই অনেকে মনে করছেন।

দলকে বাঙালি করে তুলতেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব দলের দক্ষিন কলকাতা জেলা সংগঠনের সভাপতি পদে গত জুন মাসেই নিয়ে এসেছিল সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়। এর কিছুদিনের মধ্যেই দলেরই এক মহিলাকর্মী সোমনাথের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন হরিদেবপুর থানায়। তাঁর অভিযোগ ছিল, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ও তা থেকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিকবার সোমনাথ তাঁর সঙ্গে সহবাস করেছে। এমনকি শেষের দিকে তাঁকে ধর্ষণ করতেও পিছুপা হয়নি। সেই সঙ্গে অভিযোগকারীনির কাছ থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়েও তা আর ফেরত দেয়নি অভিযুক্ত। পুলিশ সেই ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও এখনও পর্যন্ত সোমনাথকে গ্রেফতার করেনি। সেই ঘটনা সামনে আসতেই সোমনাথের থেকে দূরত্ব তৈরি করা শুরু করে বিজেপি নেতৃত্ব। এমনকি তাঁকে দলের দক্ষিন কলকাতা জেলা সংগঠনের সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশ মেনে ওই পদ থেকে ইস্তফাও দিয়ে দেন সোমনাথ।

কিন্তু এতেও বিতর্ক থামছে না। বরঞ্চ তা আরও বেড়ে চলেছে সোমনাথকে ঘিরে নিত্যনতুন অভিযোগ সামনে আসায়। এখন সোমনাথের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ তুলে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন মৃণালকান্তি দাস  নামে এক বিজেপি কর্মী। তাঁর অভিযোগ, ২০১৫ সালে পুরনির্বাচনের সময়ে কলকাতা পুরনিগমের ১১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিজেপির হয়ে প্রার্থী হয়েছিলেন সোমনাথ। সেই সময় মৃণালকান্তিবাবুর কাছ থেকে সোমনাথ ৬ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিল। কিন্তু পরবর্তী সময়ে সোমনাথ আর তা ফিরিয়ে দেয়নি মৃণালকান্তিবাবুকে। এই নিয়ে তাঁদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং বিষয়টি মৃণালকান্তিবাবু রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকেও জানিয়েছিলেন। ঘটনাচক্রে দলীয় বৃত্তে সোমনাথ দিলীপ ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত। এখন দিলীপের কাছে অভিযোগ করেও টাকা না পেয়ে বিষয়টি নিয়ে চুপ করে গিয়েছিলেন মৃণালকান্তি। কিন্তু এখন গোটা পরিস্থিতি ঘুরে গিয়েছে। রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বই এখন সোমনাথের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করছে। এই রকম সময়েই এবার হরিদেবপুর থানায় সোমানাথের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারনার অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃণালকান্তিবাবু। এমনকি সেই অভিযোগে তিনি দিলীপবাবুর নামও ঢুকিয়ে দিয়েছেন।

তিনি জানিয়েছেন, বার বার সব ঘটনা জানানোর পরও সোমনাথের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেননি রাজ্য বিজেপি সভাপতি। আর দিলীপবাবুর নাম জড়াতেই রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব এখন উঠেপড়ে লেগেছে সোমনাথকে ঝেড়ে ফেলে দিতে। রাজ্য বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে খুব শীঘ্রই হয় সোমনাথকে সাসপেন্ড করা হতে পারে বা দল থেকে বহিষ্কার করাও হতে পারে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#somnath case, #west bengal BJP

আরো দেখুন