উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

মমতার হস্তক্ষেপে খুলছে ডুয়ার্সের বন্ধ চা-বাগান

July 7, 2020 | 2 min read

উত্তরবঙ্গের বন্ধ চা বাগানগুলো খুলতে জরুরি পদক্ষেপ করল রাজ্য সরকার। এই উদ্যোগের প্রথম ধাপ হিসেবে ডুয়ার্সের তিনটি বন্ধ চা বাগান খোলার জন্য নতুন মালিক খোঁজা হচ্ছে। ওই সব চা বাগানের জমির লিজ হস্তান্তর করতে কয়েক দিন আগেই টেন্ডার ডেকেছে রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর। এর মধ্যে রয়েছে আলিপুরদুয়ার জেলার মধু চা বাগান ও বান্দাপানি চা বাগান এবং জলপাইগুড়ি জেলার সুরেন্দ্রনগর চা বাগান। তিনটি চা বাগানই বেশ কয়েক বছর ধরে বন্ধ। লকডাউনে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের দুর্দশা চরমে উঠেছে। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার বন্ধ চা বাগানগুলো খুলতে উদ্যোগী হওয়ায় সেখানকার শ্রমিকরা স্বভাবতই আশার আলো দেখছেন।

ভূমি সংস্কার দপ্তরের এক আধিকারিক জানান, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই লিজের চুক্তি ভেঙে আগের মালিকপক্ষ চা বাগান বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছেন। তাই, শ্রমিকদের স্বার্থে নতুন করে ওই সব চা বাগানের জমির লিজ দেওয়া হবে। নতুন মালিককে হেক্টর পিছু ৪৫০০ টাকা জমির সেলামি বাবদ সরকারকে মেটাতে হবে। তা ছাড়া, একর পিছু ৩০ টাকা ভাড়া দিতে হবে। সেই সঙ্গে মানতে হবে সরকারের আরও বেশ কিছু শর্ত।

নবান্ন সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে জলপাইগুড়ি জেলায় ১৭টি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ১১টি চা বাগান বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। ওই ২৮টি বন্ধ চা বাগানে সব মিলিয়ে বেকার শ্রমিকের সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি। তাঁদের দিকে তাকিয়েই বন্ধ চা বাগান খোলার পদক্ষেপ করেছে রাজ্য সরকার। আইনি ঝঞ্ঝাট এড়িয়ে সব বন্ধ চা বাগানই ধাপে ধাপে খুলে দেওয়া হবে বলে রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে রাজ্য সরকার যে ভাবে বন্ধ চা বাগান খুলতে তৎপর, তাতে আগামী দিনে উত্তরবঙ্গে শাসকদলের ভিত আরও মজবুত হবে।

লোকসভা ভোটের সময়ে উত্তরবঙ্গে নির্বাচনী সফরে এসে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বন্ধ চা বাগান খোলার আশ্বাস দিলেও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। এই নিয়ে হতাশ বন্ধ বহু চা বাগানের শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের লোকজন। লকডাউনের মধ্যে বান্দাপানি চা বাগানে ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে কার্যত পালিয়ে যেতে বাধ্য হন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। লকডাউনের সময়ে মধু চা বাগানে অনাহারে শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। তবে রাজ্য সরকার অনাহারে মৃত্যুর অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তৃণমূল সমর্থিত চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা মোহন শর্মা বলেন, ‘বন্ধ চা বাগান খোলার আবেদন জানিয়ে আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলাম। শ্রমমন্ত্রীকেও অনুরোধ করেছিলাম। সেই মতো রাজ্য সরকার উত্তরবঙ্গের তিনটি বন্ধ চা বাগান খুলতে টেন্ডার ডেকেছে। আশা করি, দু’-এক মাসের মধ্যে এই সব চা বাগানে ফের কাজ শুরু হবে।’

আইএনটিইউসি সমর্থিত ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স-এর সচিব মণিকুমার ডারনাল বলেন, ‘বন্ধ চা বাগানের জমির লিজ বাতিল করে নতুন মালিকের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার জন্য আমরা বহু দিন ধরে সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছি। এ বার নতুন মালিক দায়িত্ব নেওয়ার পর বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকরা যাতে তাঁদের বকেয়া পাওনা-গন্ডা পান, তা দেখার দায়িত্ব সরকারের।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mamata Banerjee, #Duars, #Tea Estates

আরো দেখুন