কলকাতায় ২৫টি কনটেনমেন্ট জোন, উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত এলাকাই বেশি
বস্তি বা ঘিঞ্জি এলাকার থেকে শহরের মধ্যবিত্ত এবং অভিজাত এলাকাতেই করোনার দাপট বেশি। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে আগেই সেকথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে পুরসভার তরফে যে ২৫টি কনটেনমেন্ট জোন চিহ্নিত করা হয়েছে, তাতে ছবিটা আরও স্পষ্ট হল। তাতে দেখা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত অধিকাংশ এলাকাতেই মধ্যবিত্ত, উচ্চবিত্ত এবং ধনী মানুষদের বাস।
করোনা পরিস্থিতি সামাল দিতে মঙ্গলবার নবান্নের তরফে কলকাতা পুরসভার ১৮টি এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। পরে রাজ্য সরকার, কলকাতা পুরসভা এবং স্বাস্থ্য দফতরের বৈঠকে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যা আরও বাড়ানোর চিন্তা ভাবনা চলছিল। সেই মতো এ দিন বিকালে রাজ্যের ওয়েবসাইটে রাস্তার নাম ধরে ধরে সুনির্দিষ্ট ভাবে ২৫টি কনটেনমেন্ট জোনের নাম প্রকাশ করা হয়।
ওই তালিকায় কনটেনমেন্ট জোনগুলিকে বস্তি এলাকা, মিশ্র বসতি, আবাসন এবং হাউজিং কমপ্লেক্স এলাকায় ভাগ করা হয়। তাতে কাঁকুরগাছি, উল্টোডাঙা, দত্তবাগান, করবাগানের মতো এলাকা যেমন উঠে এসেছে, তেমনই নিউ আলিপুর, বেলভেডরে রোড, জাজেস কোর্টের মতো উচ্চবিত্ত এলাকা রয়েছে। রয়েছে ভবানীপুর, অজয়নগর, ফুলবাগান, সখের বাজারের কিছু হাউজিং কমপ্লেক্সও। এ ছাড়াও বিজয়গড়, কসবা, আমহার্স্ট স্ট্রিট, মুকুন্দপুর, বেনিয়াপুকুর এলাকার মিশ্রবসতি অঞ্চলগুলিও ওই তালিকায় রয়েছে।
এ দিন যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে কাঁকুরগাছির ২০/১এন মোতিলাল বসাক রোড, আলিপুরের ৬৪এ আলিপুর রোডে অবস্থিত সত্যম টাওয়ার্স, ৫বি জাজেস কোর্ট, ১ নং বেলভেডরে রোড, ভবানীপুরের ১৯এ শরৎ বোস রোড, কলকাতা-২০, চক্রবেড়িয়া রোড, কলকাতা-২৫ (৪৯বি, ৩৬এ,৪৪,৮/১বি,১২এ), ৫৫এ ডঃ শরৎ ব্যানার্জি রোড। কলকাতা-২৯, খোট্টা বাগানের পি১২ (কাঁকুরগাছি), সিআইটি স্কিম ৭ এম, উল্টোডাঙার আরিফ রোড (১/২)। গোটা আধারচন্দ্র দাস লেন, মুকুন্দপুরের ১৩৮ পূর্বালোক, কলকাতা-৯৯ রয়েছে।
তবে কনটেনমেন্টের জোনের সংখ্যা বাড়লেও, আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু নেই বলে এ দিন শহরবাসীকে আশ্বস্ত করেন পুরসভার প্রশাসক ফিরহাদ হাকিম। এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। কারণ করোনায় সেরেও উঠছেন মানুষ। এখনও পর্যন্ত ৭০ শতাংশ মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে আমরা সকলেই সুস্থ থাকতে চাই। তার জন্য আমাদের সকলকেই সাবধানী হতে হবে।’’ সংক্রমণ এড়াতে এই মুহূর্তে, হইহই করে বাজার-দোকানে ভিড় না করার পরামর্শও দেন তিনি।
কলকাতা পুরসভা এলাকাগুলির পাশাপাশি, এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার ৯৪টি এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করে রাজ্য। সেই তালিকায় নাম রয়েছে বারাসত, বসিরহাট, বিধাননগর এবং ব্যারাকপুরের একাধিক এলাকা।
হাওড়া পুরসভা, পাঁচলা, উলুবেড়িয়া, আমতা, বাগনান, উদয়নারায়ণপুর, ডোমজুড়, জগৎবল্লভপুর মিলিয়ে হাওড়ার ৫৬টি এলাকাকেও কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।