রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

মাথাপিছু ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের সেরা বাংলা

July 8, 2020 | 2 min read

ব্যাঙ্কের উপর ভরসা নেই বহু মানুষের। তাই ব্যাঙ্ক নয়, এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পছন্দ করছেন অনেকেই। এর ফলে ক্ষুদ্রঋণের চাহিদা গোটা দেশেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে, অর্থাৎ ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত যেখানে ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ার অঙ্ক ছিল ১ লক্ষ ৭৯ হাজার কোটি টাকা, সেখানে এক বছরের মাথায় অর্থাৎ গত মার্চ পর্যন্ত ঋণের অঙ্ক বেড়ে হয়েছে প্রায় ২ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বৃদ্ধির হার প্রায় ৩০ শতাংশ। কম টাকার ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রেও গোটা দেশের মধ্যে এগিয়ে আছে পশ্চিমবঙ্গ।

ব্যাঙ্ক নয়, এমন যে যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ক্ষুদ্রঋণ দেয়, সেই সংস্থাগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশনস নেটওয়ার্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের অধীনে থেকে তারা এই কাজটি করে। তাদের হিসেব বলছে, গতবছর মার্চ পর্যন্ত যেখানে গোটা দেশে ৮ লক্ষ ৬৬ হাজার মানুষ ক্ষুদ্র ঋণ নিয়েছিলেন, সেখানে গত মার্চ পর্যন্ত মোট ১০ লক্ষ ৫৪ হাজার মানুষ ঋণ নিয়েছেন।

ওই নিয়ন্ত্রক সংস্থার তথ্য বলছে, দেশে যত ক্ষুদ্রঋণ প্রদান করা হয়, তার প্রায় ৪০ শতাংশ দখল করে রয়েছে পূর্ব ভারত। এই পরিস্থিতিতে কোথায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ? হিসেব বলছে, সারা দেশে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তামিলনাড়ুর পরেই রয়েছে এ রাজ্যের স্থান। মাথাপিছু ঋণের হিসেবে অবশ্য দেশের সেরা পশ্চিমবঙ্গ। মাইক্রোফিনান্স ইনস্টিটিউশনস নেটওয়ার্কের তথ্য অনুযায়ী এখানে প্রত্যেকে গড়ে ৫০ হাজার ৪০০ টাকা করে ঋণ নিয়েছেন।

মাথাপিছু ক্ষুদ্রঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে দেশের সেরা বাংলা

ছোট অঙ্কের টাকা ধার নেওয়ার কেন এত বাড়বাড়ন্ত? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী সংস্থাগুলি থেকে টাকা ধার নিতে গেলে গ্রাহককে অনেক বেশি সুদ মেটাতে হয়। কারণ এই সংস্থাগুলিও ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেয়। সেই টাকা থেকেই তারা সাধারণ মানুষকে ধার দেয়।

ফলে সংস্থাগুলিকে যে হারে ব্যাঙ্কগুলিকে সুদ মেটাতে হয়, তার সঙ্গে লাভের অঙ্ক জুড়ে সুদের হার নির্ধারণ করে। মাইক্রোফিনান্স সংস্থাগুলি সাধারণ মানুষের থেকে কত হারে সুদ নেবে, তা রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঠিক করে দিলেও, সুদের হার মোটের উপর চড়া থাকে। এরপরেও ঋণের অঙ্ক বা গ্রাহকদের আগ্রহ বাড়ার মূল কারণ ব্যাঙ্কে যাওয়ার অনীহা। টাকা ধার দিতে হলে ব্যাঙ্ক যে সমস্ত নথিপত্র চায়, তা অনেক ক্ষেত্রেই দিয়ে উঠতে পারেন না সাধারণ লোক। তাই তাঁদের ভরসা ক্ষুদ্রঋণ। চটজলদি নগদ টাকা পেতে তাই এর বিকল্প নেই।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেহেতু প্রতি সপ্তাহে কিস্তির টাকা মিটিয়ে দিতে হয়, তাই সেই অঙ্কও কম হয়। গ্রাহকদের ক্ষেত্রে এটাও একটা বড় সুবিধা। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, চলতি আর্থিক বছরে ঋণের অঙ্ক এবং ঋণগ্রহীতার সংখ্যা আরও অনেকটাই বাড়বে। তার কারণ, লকডাউন তো বটেই, আর্থিক পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে সাধারণ মানুষের আরও বেশি নগদ টাকার দরকার হবে। সেক্ষেত্রে ভরসা সেই ক্ষুদ্রঋণই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Micro Loans

আরো দেখুন