হাতিয়ার করোনা! রাজ্যের ব্র্যান্ডিং ‘বাংলা আমার মা’ মাস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মোকাবিলার পাশাপাশি মাস্ককে আকর্ষক করে তুলতে অভিনব উদ্যোগ মমতা বন্দোপাধায়ের সরকারের। রাজ্য সরকারেরই ব্যবস্থাপনায় বানানো হচ্ছে নতুন ডিজাইনের মাস্ক। সম্পূর্ণ ফেব্রিকের তৈরি এই ত্রিস্তরীয় মাস্কের উপর জ্বল জ্বল করবে ‘বাংলা আমার মা’। তার ঠিক নীচে কিছুটা ছোট হরফে লেখা থাকবে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’। এই ভাবে মাস্কের মাধ্যমে একই সঙ্গে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও বাংলার ব্রান্ডিং, দু’টোই করতে চাইছে নবান্ন।
নবান্ন সূত্রের খবর, মাস্কের ক্যাচলাইন লিখে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মাস্ক সরবরাহের দায়িত্ব পেয়েছে রাজ্য সরকারেরই সংস্থা ‘বিশ্ববাংলা মার্কেটিং কর্পোরেশন লিমিটেড’। রাজ্যের নেতা-মন্ত্রী ও সরকারি আধিকারিক এবং পুলিশ অফিসার ও কর্মীরা ছাড়াও আম জনতার মধ্যে এই মাস্ক বিলি করার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। আপাতত এই ধরনের মোট ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার মাস্কের বরাত দেওয়া হয়েছে। সে সবের মাপ ও রং কেমন হবে, নবান্ন থেকেই তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। বড় ও ছোট, দু’রকম মাস্ক থাকবে। বড় মাস্কের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ হবে যথাক্রমে ৭.৫ ও ৫.৫ ইঞ্চি। ছোট মাস্কগুলো দৈর্ঘ্যে ৫.৫ ইঞ্চি এবং ৪.৫ ইঞ্চি চওড়া। চারপাশে মোটা বর্ডার দেওয়া থাকবে। আকাশি, সবুজ, গাঢ় নীল, হালকা নীল, হলুদ ও হালকা ধূসর- বিভিন্ন রংয়ের মাস্ক তৈরি হবে।
কিছু দিন আগে নবান্নে পশ্চিমবঙ্গের মানচিত্রের উপর ‘মা’ লেখা সাদা-নীল মাস্ক পরে সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেটা দেখে তৃণমূলের বহু নেতা-কর্মী নিজেদের উদ্যোগে একই ডিজাইনের মাস্ক বানান। অচিরেই ‘মা’ লেখা মাস্কে বাজার ছেয়ে যায়। রাজ্য সরকারের তরফে যে নতুন ডিজাইনের মাস্ক বানাতে দেওয়া হয়েছে, তাতে ‘মা’ কথাটি থাকলেও তা দেখতে অন্য রকম হবে বলে জানাচ্ছেন নবান্নের কর্তারা।
সরকার ‘বাংলা আমার মা’ মাস্ক তৈরিতে উদ্যোগী হলেও এর মধ্যে রাজনীতি দেখছেন বিরোধীদের একাংশ। বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু বলেন, ‘এটা রাজনীতি। মাস্কের রাজনীতি। তবে ওরা যতই মাস্কের রাজনীতি করুক, এ সবে এখন আর চিঁড়ে ভিজবে না।’ তবে তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘জন্মভূমিকে তো আমরা মায়ের চোখেই দেখি। তাই, নিজের রাজ্যকে মা বলার মধ্যে অন্যায় কিছু নেই। যারা নিজের বাপ-মাকে শ্রদ্ধা করে না, একমাত্র তারাই এর বিরোধিতা করতে পারে।’