আশার আলো – জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমছে ভারতে
বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা ১৩৭ কোটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০২৭ সালে দেশের জনসংখ্যা ছুঁয়ে ফেলবে ১৫০ কোটি। চীনকে পেছনে ফেলে পৃথিবীর সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ হয়ে যাবে ভারত। ২০৫০ সালে ভারতের জনসংখ্যা হতে পারে ১৭৩ কোটি।
তবে আশার আলো এই যে গত কয়েক দশক ধরে ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমেছে। দেশে শহরাঞ্চলের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং শিক্ষার প্রসার এর অন্যতম কারণ। ২০২১ সালে বেশীরভাগ রাজ্যেই মহিলা পিছু সন্তানের সংখ্যা ২.১ হতে চলেছে।
৬০ এবং ৭০ এর দশকের ব্যাপক জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে দেশে খাদ্যাভাব সৃষ্টি হতে পারতো। তবে সবুজ বিপ্লবের ফলে এই বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। চীন যেমন এক সন্তান নীতি প্রণয়ন করেছে, ভারত শুরু করেছিল নির্বীজকরণ প্রক্রিয়া। ভারতে ১৯৭৬-৭৭ সালে ৮০ লক্ষের বেশী মানুষকে জোর করে নির্বীজ করা হয়, অধিকাংশই পুরুষ। নির্বীজকরণ ছাড়া গত ৩০ বছরে ভারত সরকার জনসংখ্যা হ্রাসের জন্য আর সেরকম কোনও পন্থা অবলম্বন করেনি।
২০১৪ সালে ছত্তিসগড়ে একটি গণ নির্বীজকরণ ক্যাম্পে ১৫ জন মহিলা মারা যাওয়ার পর ২০১৬ সালে ভারতের সুপ্রীম কোর্ট এই ক্যাম্প নিষিদ্ধ করে দেয়। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞদেরই মত হল জনসংখ্যা রোধে নির্বীজকরণ সেরা পন্থা। বিহার, উত্তরপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান ও মধ্যপ্রদেশে সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা ভালো না। নেই শিক্ষার প্রসার। তাই জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রবণতাও বেশি।
বিহারে মহিলাপিছু সন্তানের সংখ্যা ৩.২ যা দেশে সর্বোচ্চ। এই রাজ্যে নিরক্ষর মহিলার সংখ্যা ২৬.৮ শতাংশ। উল্টোদিকে, কেরলে স্বাক্ষরতার হার ৯৯.৩ শতাংশ। সেখানে মহিলাপিছু সন্তানের সংখ্যা সব থেকে কম। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও মহিলাপিছু সন্তানের সংখ্যা বড় রাজ্যগুলির মধ্যে সর্বনিম্ন।
স্থানীয় সংস্কৃতি, সমাজ ও রাজনীতির ফলে চিন্তাধারা ও অভ্যেস বদলাতে সময় লাগে। পরিবার পরিকল্পনা খাতে সরকারের ব্যয় আশাতীত নয়। ভবিষ্যতে জনসংখ্যা প্লাবনের থেকে রেহাই মেতে চাই সদর্থক নীতি ও তার সঠিক প্রণয়ন।