মাস্ক ও পিপিই তৈরিতে স্বনির্ভর রাজ্য
চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে কোভিড প্রতিরোধী মাস্ক ও পিপিই তৈরিতে স্বনির্ভর হল রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে নির্দেশে করোনা-যুদ্ধের রসদ তৈরিতে উদ্যোগ নেয় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প দপ্তর (এমএসএমই)। গত তিন মাসে লক্ষ্যপূরণে সফল তারা। মাস্ক ও পিপিই তৈরিতে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলা। আর সেই ভরসা থেকেই, রাজ্যবাসীর জন্য নতুন করে ‘থ্রি লেয়ার’ বিশিষ্ট তিন কোটি মাস্ক বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মাস্কের ‘ক্যাচ ওয়ার্ড’ও তৈরি করেছেন তিনি নিজেই। কী সেই ক্যাচ ওয়ার্ড? মাস্কে লেখা থাকবে ‘বাংলা আমার মা’। নীচে ছোট হরফে লেখা থাকবে ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার’।
নবান্ন সূত্রের খবর, করোনা প্রতিরোধের সরঞ্জাম তৈরিতে কর্মসংস্থানের উপরও জোর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ক্ষেত্রে গ্রামীণ এলাকার ১৫ থেকে ২০ হাজার প্রান্তিক মানুষ পাবেন রোজগারের সুযোগ। তাতে দু’টি লক্ষ্য পূরণ হবে। এক, বিপর্যয়ের পর্বে বাড়বে নগদের জোগান। চাঙ্গা হবে রাজ্যের অর্থনীতি। ওই সূত্রের দাবি, লকডাউনের তিন মাসে ১০০ দিনের কাজে ১১ কোটি ৫৩ লক্ষ কর্ম দিবস তৈরি হয়েছে। এবার মাস্ক তৈরির মাধ্যমে আরও প্রায় দেড় কোটি কর্ম দিবস তৈরি করাটাই টিম মমতার টার্গেট।
এমএসএমই দপ্তরের ডিরেক্টর অনুরাগ শ্রীবাস্তবের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই বিরাট কর্মযজ্ঞের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আমরা গর্বিত। গোটা দেশের মধ্যে, বাংলাই প্রথম রাজ্য, যারা এরকম একটা উদ্যোগ নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে তিন কোটি মাস্ক তৈরির এই কাজ শুরু করেছি আমরা। গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের রোজগারের মাধ্যম হবে এই প্রক্রিয়া।’
করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই কেন্দ্রকে মাস্ক ও পিপিই পাঠানোর দাবিতে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্যের চাহিদা মতো কোভিড প্রতিরোধী কোনও সরঞ্জামই পাঠায়নি মোদির সরকার। তার পরেই মাস্ক ও পিপিই তৈরিতে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন মমতা। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এমএসএমই’র তৈরি তিন কোটি মাস্ক বিতরণ করা হবে রাজ্যের ১ কোটি ৯ লক্ষ স্কুল পড়ুয়া, আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং ১০০ দিনের কাজে যুক্তদের। এই পর্বে ইতিমধ্যেই ৬ লক্ষ মাস্ক তৈরির কাজ শুরু করা হয়েছে।
ওই সূত্রটি জানিয়েছে, গোটা বাংলাকে এক সুতোয় বাঁধতে, মাস্ক বড় মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘনিষ্ঠ মহলে মমতার বক্তব্য, ১০ কোটি বেশি জনসংখ্যার এই রাজ্য বাংলায়, সবার কাছে এই মাস্ক ধাপে ধাপে পৌঁছে দেওয়াটাই তাঁর লক্ষ্য।