সংসদীয় নজরদারিতে বাধায় ক্ষুব্ধ বিরোধীরা
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর গড়া পিএম-কেয়ার্স তহবিলে চিনা সংস্থাগুলির অনুদানের তথ্য ধামাচাপা দিতেই সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির নজরদারি আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন রাহুল গাঁধী। কেন পিএম-কেয়ার্স তহবিলে সংসদীয় নজরদারি আটকানোর চেষ্টা হচ্ছে, তা নিয়ে আজ কংগ্রেসের সঙ্গে প্রশ্ন তুলল সিপিএম এবং তৃণমূল কংগ্রেসও।
শুক্রবারই সংসদের পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী প্রস্তাব দিয়েছিলেন, পিএম-কেয়ার্স তহবিল থেকে করোনার মোকাবিলা, বেকারত্বের মতো সব বিষয়ে কমিটিতে আলোচনা হোক। কিন্তু বিজেপি ও তার শরিক দলের সাংসদরা এককাট্টা হয়ে তাতে আপত্তি তোলেন। সংসদীয় কমিটিতে কংগ্রেস বা বিরোধী দলের আর বিশেষ কেউ না থাকায় অধীর একা পড়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু আজ রাহুল গাঁধী, সীতারাম ইয়েচুরি, মহুয়া মৈত্রও সরব হয়েছেন।
রাহুল সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘পিএম-কেয়ার্স তহবিলে কারা টাকা দিয়েছেন, তাদের নাম জানাতে প্রধানমন্ত্রী এত ভয় পাচ্ছেন কেন? সবাই জানে চিনা সংস্থা হুয়ায়েই, শাওমি, টিকটক, ওয়ান প্লাস চাঁদা দিয়েছে। উনি কেন বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ্যে আনছেন না?’’ করোনা মোকাবিলায় পিএম-কেয়ার্স তহবিল গঠনের পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, কেন প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিলের থেকে আলাদা করে এই তহবিল তৈরি হল? এই তহবিলে সিএজি-র হিসেব পরীক্ষা বা তথ্যের অধিকার আইনেও কিছু জানাতে রাজি হয়নি সরকার। লাদাখে চিনা অনুপ্রবেশের পর রাহুল পিএম-কেয়ার্সে চিনা সংস্থার চাঁদা নিয়ে প্রশ্ন তুলতেই বিজেপি পাল্টা অভিযোগ তোলে, গাঁধী পরিবারের ট্রাস্টেও অতীতে চিনের চাঁদা এসেছে। তার পরে এ নিয়ে তদন্তও শুরু করেছে মোদী সরকার। কিন্তু পিএম-কেয়ার্স নিয়ে মুখে কুলুপ সরকারের কর্তাদের।
সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সরকার কী লুকোচ্ছেন? প্রথমে, সিএজি-র হিসেব পরীক্ষায় আপত্তি, তার পরে, তথ্যের অধিকার আইনে প্রশ্ন খারিজ। এ বার সংসদীয় কমিটির নজরদারিতেও আপত্তি। দেশ জানতে চায়, মানুষের টাকা কী ভাবে খরচ হচ্ছে। নির্বাচনী বন্ড, নোট বাতিলের পরে পিএম-কেয়ার্স তহবিলও আর একটা কেলেঙ্কারি।’’ তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র বলেন, ‘‘কমিটির বৈঠকে বিজেপির গায়ের জোরে সব কিছু আটকে দেওয়ার কৌশল স্পষ্ট। এই তহবিল যদি সর্বরোগহরাই হবে, তা হলে প্রধানমন্ত্রী কেন তা আমাদের ভাল করে দেখতে দিচ্ছেন না?’’
আজ কংগ্রেসের বৈঠকে সনিয়া গাঁধী দলের সাংসদদের বলেছেন, সংসদের বাদল অধিবেশন ডাকার জন্য সরকারের উপর চাপ দিতে হবে। করোনা, চিনের সঙ্গে নিয়ন্ত্রণরেখায় সংঘাতের মতো বিষয় নিয়ে সংসদে প্রশ্ন তুলতে হবে।