টানা বর্ষণে বাড়ছে জলস্তর, তিস্তা ও জলঢাকায় হলুদ সংকেত
পাহাড়ে বৃষ্টির জেরে তিস্তায় বাড়ছে জলস্তর। তিস্তা নদীর অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সংকেত। টানা বৃষ্টিতে ফুলেফেঁপে ওঠায় জলঢাকা নদীতেও জারি হল হলুদ সংকেত। আবহওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী ১২ জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
একটানা বৃষ্টি চলছে উত্তরবঙ্গে। শুক্রবার গজলডোবা ব্যারেজ থেকে ৩২১৮.৭২ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ফলে জলস্তর বৃদ্ধি হয়েছে তিস্তায়। এক ধাক্কায় অনেকটা জলস্তর বৃদ্ধির ফলে শুক্রবার সকাল থেকে হলুদ উভয় সংকেত জারি করা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ৫০.৪০ মিলিমিটার। বানারহাটে ৯০.০০ মিলিমিটার এবং আলিপুরদুয়ারে বৃষ্টি হয়েছে ৪২.৪০ মিলিমিটার।
রাতভর বৃষ্টির ফলে নালা উপচে পড়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার ২৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে বেশিরভাগ ওয়ার্ড জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বাড়িতে জল ঢুকে যাওয়ায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই সব ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের। জলপাইগুড়ি পুর এলাকার বাসিন্দা সৌরভ কর বলেন, ‘‘বৃষ্টির ফলে জলপাইগুড়ি শহরের প্রাণকেন্দ্র কদমতলা- সহ বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় জল জমে গেছে। খানাখন্দ বোঝা যাচ্ছে না কিছুই। ফলে যাতায়াতে প্রচণ্ড অসুবিধা হচ্ছে।’’
আরেক বাসিন্দা উর্মিলা পাশোয়ান বলেন, ‘‘বৃষ্টিতে বাড়িতে জল ঢুকে গেছে। পানীয় জল আনতে নোংরা জল পেরিয়ে যেতে হচ্ছে। খুব সমস্যায় পড়ে গেছি আমরা।’’
জলপাইগুড়ি জেলাশাসক অভিষেককুমার তিওয়ারি জানান, তিস্তার পার ধরে বৃহস্পতিবার থেকেই তাঁরা মানুষজনকে সতর্ক করছেন। মাইক নিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। তিস্তার অসংরক্ষিত এলাকায় লাল সংকেত জারি হওয়ার পর দুপুর থেকে ময়নাগুড়ি ব্লকের জলমগ্ন কিছু এলাকার দুর্গতদের উদ্ধার করে ফ্লাড শেল্টারে আনার জন্য বিডিওকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। প্রয়োজনে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে নামানো হবে। বন্যা মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত রয়েছি। পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। যেখানে যেমন প্রয়োজন সেখানে সেইরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
উদ্বেগ বেড়েছে ধূপগুড়ি ব্লকের জলঢাকা নদীর পারের বাসিন্দাদেরও। ধূপগুড়ি ও ময়নাগুড়ির সংযোগস্থল জলঢাকা নদী। নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় সেচ দফতরের পক্ষ থেকে নদী পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত এবং অসংরক্ষিত এলাকায় জারি করা হয়েছে হলুদ সংকেত। আর তাতেই জলঢাকা বাজার সংলগ্ন কিছু বাড়ি রয়েছে যা একদম নদী লাগোয়া সেখানকার বাসিন্দাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
স্থানীয় বাসিন্দা সঞ্জীব রায় বলেন, ‘‘জল বাড়লেই ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়। কোনও জন প্রতিনিধি বা আধিকারিক, কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেননি।’’
ধূপগুড়ি ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে পুরো পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। মানুষ যাতে বিপদে না পড়েন তার জন্য প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে।