করোনাগ্রাসে পুজো? চিন্তায় বাংলা, বিশ্বও
করোনা অতিমারী একসূত্রে বেঁধে দিল দেশ-বিদেশের পুজো কমিটিগুলিকে। সকলের একটাই চিন্তা, কী হবে এ বছর? পুজো হবে তো!
হাতে আর মাত্র একশো দিন। অন্য বছর এই সময় সাজ সাজ রব, কাউন্টডাউন শুরু। কিন্তু এ বছর পুজো কমিটির কর্তাদের অনিশ্চয়তা কাটছেই না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হওয়ার বিশেষ সম্ভাবনা নেই। সে ক্ষেত্রে কেমন হবে বারোয়ারি পুজোগুলোর আয়োজন? এ সব নিয়ে আলোচনা করতে শনিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সের আয়োজন করেছিল ব্রিটেনের প্রবাসী বাঙালিদের সংগঠন ‘বেঙ্গল হেরিটেজ ফাউন্ডেশন’ এবং ‘লন্ডন শারদ উৎসব’। ইংল্যান্ড ও আমেরিকার বিভিন্ন শহরের পুজো কমিটির পাশাপাশি, কলকাতার বালিগঞ্জ কালচারাল এবং ভবানীপুর ৭৫ পল্লির পুজো উদ্যোক্তারা সামিল হয়েছিলেন তাতে। অংশ নিয়েছিল ‘ফোরাম ফর দুর্গোৎসব’। দেশ-বিদেশের পুজো কমিটির উদ্যোক্তাদের এমন অনলাইন আলোচনাসভা আগে হয়নি। ভবানীপুর ৭৫ পল্লি পুজো কমিটির সম্পাদক সুবীর দাস বলেন, ‘করোনাকালে কী ভাবে পুজো হবে, তা নিয়ে আমাদের পাশাপাশি ইংল্যান্ড, আমেরিকার পুজো কমিটিগুলিও দুশ্চিন্তায় রয়েছে। তাই শনিবারের ওই ভিডিয়ো কনফারেন্স।’ শনিবারের আলোচনা থেকে স্পষ্ট টেমস হোক বা গঙ্গার পাড় — এ বছর দুর্গাপুজোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে করোনাভাইরাসের গতি-প্রকৃতির উপর। শনিবারের ওই আলোচনাসভার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘করোনাসুরমর্দিনী’। সুবীরের কথায়, ‘আমরা সবাই সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি। সরকার যে নির্দেশিকা দেবে, আমরা সেটাই মেনে চলব। বিদেশের পুজো কমিটির উদ্যোক্তারাও সে দেশের সরকারের মুখ চেয়ে রয়েছেন।’ লন্ডন শারদে উৎসব কমিটি ইউরোপ, আমেরিকার বেশ কয়েকটি পুজোর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে আসছে বহু বছর।
কুমোরটুলির মৃৎশিল্পী মিন্টু পাল অংশ নিয়েছিলেন ওই ভিডিয়ো কনফারেন্সে। তাঁর কথায়, ‘কুমোরটুলির শিল্পীদের অবস্থা খুব খারাপ। তাঁদের গোটা বছরের আয় হয় এই সময়টায়। কিন্তু এ বার পুজোর একশো দিন আগেও শিল্পীদের হাতে কাজ নেই বললেই চলে। তবু আমি আশাবাদী। তাড়াতাড়ি সব ঠিক হয়ে যাবে।’ সন্তোষপুর লেকপল্লির সম্পাদক সোমনাথ দাস ‘করোনাসুরমর্দিনী’তে অংশ না নিলেও তিনি চাইছেন পুজোর সঙ্গে জড়িত নানা পেশার মানুষের মুখ চেয়ে ছোট করে হলেও এ বছর দুর্গোৎসব হোক। তাঁর কথায়, ‘আমরা আশাবাদী। পুজো হবেই। হয়তো আগের মতো জৌলুস থাকবে না। করোনাকে হারিয়ে আমাদেরই জয় হবে। হাতে এখনও একশো দিন আছে।’ ভিডিয়ো কনফারেন্সে হাজির ছিলেন, লন্ডন শারদ উৎসবের বিদিশা দত্ত, ওয়েলস পুজো কমিটির সন্দীপ সাহা, ডাবলিন পুজো কমিটির পৃথ্বীশ মজুমদার। বালিগঞ্জ কালচারাল পুজো কমিটির তরফে হাজির ছিলেন সপ্তর্ষি বসু এবং টালা বারোয়ারির অভিষেক ভট্টাচার্য। পুজোর সঙ্গে সম্পর্কিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বাঁচবো’র সভাপতি ধীরেশ কুমার চৌধুরীও মতামত জানান।