উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

প্রবল বর্ষণে ভুট্টা চাষে চরম ক্ষতি, চিন্তিত চাষিরা

July 13, 2020 | 2 min read

দিনের পর দিন প্রবল বৃষ্টির জেরে গাজোলের বহু এলাকা প্লাবিত। কোথাও কোথাও আবার নদীর বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়েছে চাষের জমিতে। ডুবে গিয়েছে ধান, পাট, ভুট্টা সহ বিভিন্ন শাক সবজির জমি। যার ফলে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তবে বর্তমানে সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে ভুট্টা চাষিরা। একেতো চাষের জমিতে জল ঢুকে ডুবে গিয়েছে বিঘার পর বিঘা ভুট্টার খেত। তার উপর প্রায় প্রতিদিনই লাগাতার বৃষ্টির জেরে শুকোতে পারছেন না জমি থেকে তুলে আনা ভুট্টা। ঠিকমতো শুকোতে না পারায় দানাতে শুরু হয়ে গিয়েছে অঙ্কুরোদগম। আর তার জেরেই মাথায় হাত পড়েছে চাষিদের। লালনপালন করে ভালো ফলন হলেও ফসল তুলে বাজারজাত করতে পারছেন না তাঁরা।

বেশ কয়েক বছর ধরে মূলত গাজোলের ডোবা এলাকাতে ব্যাপকভাবে হচ্ছে ভুট্টার চাষ। লাভ ভালো হওয়াতে বিকল্প এই চাষের দিকে ঝুঁকছেন অনেক কৃষক। তাই এবারেও বেশ ভালো ভুট্টা চাষ হয়েছিল গাজোলে। ফলনও হয়েছিল বেশ ভালোই। কিন্তু বিধিবাম, বলতে গেলে প্রায় গোটা আষাঢ় মাস ধরেই চলছে লাগাতার বৃষ্টি। আর এই অবিরাম বৃষ্টির ফলে গাজোলের ভুট্টা চাষীদের মাথায় হাত পড়েছে, বৃষ্টির ফলে ভুট্টা খেতে জল জমে গিয়েছে। অনেকের ভুট্টা জলে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে সমস্ত কৃষক অনেক কষ্ট করে জমি থেকে ভুট্টা তুলে বাড়িতে নিয়ে এসেছেন অবিরাম বৃষ্টির ফলে ভুট্টা শুকোতে পারছেন না তাঁরা। ফলে বাড়িতেই ভুট্টা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ভুট্টা চাষি গোবিন্দ সিংহ, অনিল রায়, প্রফুল্ল সিংহরা বলেছেন, ‘এবার ভুট্টার ফলন মোটামুটি ভালোই হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি আমাদের চরম ক্ষতি করে দিল। নদীর জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় প্লাবিত হয়েছে ভুট্টার খেত। তবুও আমরা বহু কষ্ট করে জলের ভিতর থেকে ভুট্টা তুলে নিয়ে এসেছিলাম। দরকার ছিল কড়া রোদে সেই ভুট্টাগুলোকে শুকিয়ে নেওয়া। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টির জেরে সেই ভুট্টা আমরা শুকোতে পারিনি। ভুট্টাগুলো ভিজে থাকার জন্য দানা থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে অঙ্কুরোদগম। অনেক দানা আবার কালো হয়ে গিয়েছে। এমনিতেই এবার লকডাউন এর জন্য হাট বসছে না। ফলে বিক্রি করার ক্ষেত্রে চরম সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিছু কিছু ফড়েরা গ্রামে এসে ভুট্টা কিনছেন কিন্তু দাম দিচ্ছেন অনেক কম। কুইন্টাল প্রতি দাম পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৭০০-৯০০ টাকা। ফলে ব্যাপকভাবে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছিলেন। কেউ কেউ আবার মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে চাষ করেছিলেন। এখন কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবেন, আর কীভাবেই বা আগামী দিনে সংসার চালাবেন তা ভেবে চিন্তিত তাঁরা।’ সরকারের কাছে চাষিদের আবেদন, এই অবস্থায় সরকার যদি তাঁদের দিকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় তাহলেও কিছুটা স্বস্তি পাবেন তাঁরা। তা না হলে আগামী দিনে জীবন-জীবিকা চালানো দুষ্কর হয়ে পড়বে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#malda, #Rain, #corn field, #Gazole

আরো দেখুন