বিধায়ক-মৃত্যুতে সিবিআই তদন্ত চাই, রাষ্ট্রপতির কাছে দাবি বিজেপির
হেমতাবাদে বিধায়ক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি নিয়ে এ বার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল বিজেপি। তাদের দাবি, নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের গ্রেফতার করার ব্যাপারে রাজ্য পুলিশকে একেবারেই ভরসা করা যায় না। এর আগে, শতাধিক রাজনৈতিক খুনের ঘটনার তদন্তে পুলিশি ব্যর্থতার নজির রয়েছে। তাই হেমতাবাদের ঘটনায় সিবিআই তদন্তই হওয়া চাই। সিবিআই তদন্তের দাবি জানানোর পাশাপাশি, মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজনৈতিক হিংসা’র বিশদ খতিয়ানও তাঁর সামনে তুলে ধরেন বিজেপি নেতৃত্ব।
সোমবার হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর থেকে তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিজেপি। যদিও আজ সকালে পুলিশের হাতে আসা ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবেন্দ্রনাথ আত্মহত্যা করেছেন বলেই ইঙ্গিত মেলে। ময়নাতদন্তের সেই রিপোর্ট সামনে আসার আগেই এ দিন সকালে দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ওই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন। রাজ্যে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্ত এবং রাজ্যসভার সাংসদ স্বপনকুমার গুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় রাষ্ট্রপতিকে একটি চিঠিও দেন।
সেই চিঠিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যের পরিস্থিতি কেমন ছিল, তা-ও উল্লেখ করা হয়। সেখানে লেখা হয়, ‘‘২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এ ভাবে গাছে ঝুলিয়ে খুন করেছিল শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গুন্ডারা। এই ঘটনা সেই ভয়ঙ্কর হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করিয়ে দিল। পুরুলিয়ায় বিজেপির দুই তরুণ নেতা ত্রিলোচন মাহাতো এবং দুলালকুমারকে এ ভাবেই গাছে ঝুলিয়ে খুন করা হয়। তখনও স্থানীয় পুলিশে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল।’’ চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘‘গত কয়েক দশক ধরে রাজনৈতিক হিংসা এবং খুনের ঘটনায় জর্জরিত পশ্চিমবঙ্গ। গত তিন বছরে শাসকদলের গুন্ডাদের হাতে ১০৫ জন বিজেপি নেতা ও সমর্থক খুন হয়েছেন। কিন্তু কোনও অভিযুক্তকেই হেফাজতে নেওয়া হয়নি। তাতে সাধারণ মানুষের দুর্দশা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ায় এই মুহূর্তে রাজ্যে যা পরিস্থিতি, সে দিকে নজর দিতে অনুরোধ জানাচ্ছি আপনাকে। রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস চলছে। নাগরিক নিরাপত্তা এবং রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে।’’