উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

July 14, 2020 | 2 min read

হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়কের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করল সিআইডি। ধৃতের নাম নিলয় সিংহ। তিনি বাড়ির মালদহ জেলার ইংলিশ বাজার থানা এলাকার বাসিন্দা। বিধায়কের পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে তাঁর নাম ছিল বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, সুইসাইড নোটে নাম থাকা চাঁচল থানার সামসির বাসিন্দা মামুদ আলির খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।

আজ সকালে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় বিধায়কের মৃতদেহ বিজেপি কর্মী ও নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা কার্যালয়ে তাঁকে পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী, উত্তর মালদার সাংসদ খগেন মুর্মু, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামানিক এবং জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী।

এদিকে বিধায়ক মৃত্যুর ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হল বিজেপি। সোমবার বিধায়কের মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই তাঁকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে আসছে বিজেপি। আজ সকালে ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে দেবেনবাবু আত্মহত্যা করেছেন বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। এদিন সকালে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বিজেপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দেখা করে।

বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা বাংলায় দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় নেতৃত্বে ওই দলে রাজ্যে বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা এবং রাজ্যসভার সাংসদ স্বপনকুমার গুপ্ত ছিলেন। তাঁরা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি একটি চিঠিও দেন। চিঠিতে সিবিআই তদন্তের পাশাপাশি আরও কিছু দাবি জানিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব।

উল্লেখ্য, সোমবার সকালে হেমতাবাদের বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। রায়গঞ্জ থানার বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের বালিয়াদিঘী গ্রামে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক বন্ধ দোকানের বারান্দা থেকে উদ্ধার হয়েছে তাঁর ঝুলন্ত দেহ। পরিবার অভিযোগ করেছে, তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা। বিধায়কের ঝুলন্ত মৃতদেহ নজরে আসতেই এলাকায় রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায়। পরবর্তীকে ঘটনার তদন্তের ভার সিআইডির হাতে দেয় রাজ্য।

বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান তথা বিধায়কের স্ত্রী চাঁদিমা রায় বলেন, ‘আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। যারা খুন করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’ বিজেপির জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী বলেন, ‘আমাদের দলের বিধায়ক কে সুপরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে।’ ২০১৬ সালে হেমতাবাদ বিধানসভা আসন থেকে সিপিএম দলের টিকিটে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয় দেবেন্দ্রনাথ রায়। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর সিপিএমের সঙ্গ ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করেন দেবেনবাবু।

বিধায়কের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগারওয়াল বলেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোন যোগ নেই। পুলিশ তদন্ত করলে আসল রহস্য সামনে আসবে।’ এদিকে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার না করা হলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, গতকাল পুলিশ দাবি করেছিল, মৃতের জামার পকেট থেকে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া গিয়েছে, যাতে দু’জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি গুরুতর অভিযোগ এনেছেন রাজ্য়পাল। বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে ধাপাচাপা দিতে চাইছে পুলিশ, এমনই অভিযোগ রাজ্যপালের।

সোমবার টুইটে রাজ্যপাল লিখেছেন, ‘পুলিশ বিধায়কের মৃত্যু আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দিতে চাইছে। বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করাতে হবে। পাশাপাশি ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফিও করতে হবে।’ ঘটনার তদন্তে তিনি স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Hemtabad, #CID

আরো দেখুন