রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

পরিবহণেও করোনার থাবা, মৃত ১

July 14, 2020 | 2 min read

পরিবহণ দপ্তরও বাদ রইল না করোনার থাবা থেকে। সোমবারই মারা গিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের কসবা ডিপোর কর্মী অনন্ত পাত্র। নিগমের আরও ১৪ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে কয়েক জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও আতঙ্ক কিন্তু তাড়া করে বেড়াচ্ছে পরিবহণ দপ্তরের কর্তা থেকে কর্মী সকলকেই। আতঙ্কে বহু বাসের চালক ও কন্ডাক্টর ছুটি চাইছেন। যদিও আনলক-২ পর্বে বৃহত্তর কলকাতায় যাত্রী পরিষেবা নিশ্চিত করতে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা নিগমের চালক ও কন্ডাক্টরদের ছুটি ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাতিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

শুধু কর্মীরা নন, আতঙ্কিত পরিবহণ দপ্তরের কর্তারাও। বিবাদী বাগে পরিবহণ ভবনে সিটিসি ও ভূতল পরিবহণ নিগমের দুই কর্মী কোভিড পজিটিভ ধরা পরে। তার পরই আতঙ্ক ছড়িয়েছে পরিবহণ ভবনের আধিকারিকদের মধ্যে। খোদ পরিবহণ সচিব প্রভাত মিশ্র এই ভবনে তাঁর অফিসে গত বৃহস্পতিবার থেকেই যাচ্ছেন না। পরিবর্তে ময়দানে পরিবহণ দপ্তরের টেন্টে বসে বেশির ভাগ সময় কাজ করছেন। পরিবহণ ভবনে পা রাখা বন্ধ করেছেন পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর রাজেনভীর সিং কাপুরও। তালিকায় রয়েছেন আরও অনেক ছোট-বড় অফিসার।

গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে লকডাউন কঠোর ভাবে চালু হওয়ায় পথে কমেছে মানুষ। কমেছে বাসও। উত্তর শহরতলির ২৪০, ৩৪সি, ৪৩, ২৩৩, ৩৪বি-র মতো কয়েকটি রুটে সম্পূর্ণ ভাবে বাস চলাচল বন্ধ করা হয়। বেসরকারি বাস মালিকদের মতে, গোপাললাল ঠাকুর রোড, এ কে মুখার্জি রোড-সহ বেশ কিছু রাস্তায় বাস চলাচল পুলিশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয়। দক্ষিণ শহরতলির বহু রুটেও এর প্রভাব পড়েছে।

অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় জানান, এমনিতেই আতঙ্কে বহু চালক ও কন্ডাক্টর কাজে আসছেন না। এর প্রভাব পড়েছে জেলার বাস পরিষেবাতেও। গত শুক্রবার আবার বেসরকারি বাস পথে নামলেও যাত্রী না-থাকায় প্রায় কুড়ি শতাংশ বেলার দিকে গ্যারেজ করে দেয়। ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস মিনিবাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্মসচিব প্রদীপনারায়ণ বসুও বলছেন, যাত্রীর অভাব ও চালক-কন্ডাক্টর না থাকায় বহু রুটে পর্যাপ্ত বেসরকারি বাস পথে নামানো যায়নি। মিনিবাস অপারেটর্স কো-অর্ডিনেশন কমিটির স্বপন ঘোষ বলেন, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে ব্যবসা হবে এই আশাতেই সকালের দিকে বৃহত্তর কলকাতার বিভিন্ন রুটে নামলেও বেলা বাড়তেই প্রায় কুড়ি শতাংশ বসে যায়। দামী ডিজেল দিয়ে খালি গাড়ি কেউ চালাতে চাইছে না। জয়েন্ট কাউন্সিল অফ বাস সিন্ডিকেটের সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বেসরকারি বাসের চালক ও কন্ডাক্টরদের একটা অংশ রাতে বাসেই থাকেন। বাড়ি ফেরেন না। টানা পাঁচ দিন কাজ করে দু’দিন ছুটি নিয়ে বাড়ি যান। তাঁরাও এখন আতঙ্কে বাসে থাকতে চাইছেন না।

শহরে এদিন কমেছে সরকারি বাসও। দৈনিক গড়ে ১৪০০ থেকে ১৫০০ বাস নামছিল, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগম প্রায় ১,১০০ বাস পরিষেবা দিচ্ছিল। এই সংখ্যাটাও এদিন কিছুটা কমে। কোভিড পরিস্থিতিতে শহরের জনপরিবহণ স্বাভাবিক রাখতে এসবিএসটিসির তিনশো ও এনবিএসটিসির একশো বাস নামানো হয়েছিল। এই দুই নিগমের চালক ও কন্ডাক্টর ছুটি চাওয়ায় তাদের বাসের সংখ্যাও কিছু কমেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #covid-19, #Transport Worker

আরো দেখুন