কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

করোনা-হানায় থমকে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ

July 14, 2020 | 2 min read

সব বাধা পেরিয়ে গন্তব্য যখন হাতের নাগালে, তখনই ফের থমকে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। আর্থ প্রেশার টানেল বোরিং মেশিন (টিবিএম) ‘ঊর্বী’র চলার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াল করোনাভাইরাস। বউবাজার থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কাটার কাজের সঙ্গে যুক্ত ১৪ জন কর্মীর শরীরে মিলেছে কোভিড-১৯। এঁদের মধ্যে সুপারভাইজার স্তরের কর্মীও রয়েছেন। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসাবে বন্ধ রাখা হয়েছে সুড়ঙ্গ কাটার কাজ। পাতালে বিভিন্ন বিভাগের যে ১৫০ জন কাজ করছিলেন, সবার কোভিড পরীক্ষার পর রিপোর্ট সন্তোষজনক এলে ফের কাজ শুরু করা হবে বলে জানা গিয়েছে।

প্রায় সব বাধাই পার হয়েছিল ঊর্বী। বউবাজারের ‘বিপজ্জনক’ চিহ্নিত এলাকা পেরিয়ে ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া পর্যন্ত এসে গিয়েছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পূর্বমুখী সুড়ঙ্গ কাটার এই যন্ত্র। এ বার বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ধরে সোজা শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছনোই ছিল অপেক্ষা। মাত্র ৫০০ মিটারের এই দূরত্ব পেরোতে খুব বেশি হলে ২০ দিন লাগার কথা। এমন সময়েই ঘটল বিপত্তি।

ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এই অংশের নির্মাণের দায়িত্বে থাকা আন্তর্জাতিক নির্মাণ সংস্থা আইটিডি-আইটিডি সেম-এর দাবি, করোনার উপদ্রবের প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে নতুন করে পাতালে কাজ শুরু হলে সরকারি নির্দেশমতো সব বিধি-নিষেধই মানা হচ্ছিল। নির্মাণকারী সংস্থার আধিকারিকরা বলছেন, ‘গোটা এলাকা নিয়মিত স্যানিটাইজ করা হয়। কর্মীর সংখ্যাও কমানো হয়েছিল। প্রতি শিফটে খুব বেশি হলে ৩০ জনকে নামানো হত। নিরাপদ দূরত্ব যতটা সম্ভব মেনেই কাজ হত।’ আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, মাটির ২৫ মিটার গভীরে ভ্যাপসা গরমে পিপিই পরে কাজ করা সম্ভব নয়। আর কাজের যা ধরন, সেটা পিপিই পরে করা যেত না। কয়েক মিনিট পর থেকে মাস্ক পরে থাকতেই কষ্ট হত কর্মীদের। দম আটকে আসত। তাই কিছুক্ষণ পর পরই তাঁদের উপরে খোলা হাওয়ায় পাঠানো হত।

কর্মীরাও জানাচ্ছেন, সুড়ঙ্গে নামার আগে তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হত। প্রতি ঘণ্টায় দেহ স্যানিটাইজ করা হত। উপরে উঠলেও নির্দিষ্ট গণ্ডির বাইরে যেতে দেওয়া হত না। এত ব্যবস্থার পরেও ডাক্তারি পরীক্ষায় ১৪ জন কর্মীর শরীরে করোনাভাইরাসের নমুনা মিলেছে। কী ভাবে হল? সুড়ঙ্গে কাজ করার সময়, নাকি বাড়িতেই কোনও ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন তাঁরা? এর জবাব পাননি নির্মাণসংস্থার কর্তারা। তবে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে শুক্রবার থেকে কাজ বন্ধ করা হয়েছে। তিন শিফটে যে ১৫০ জন সুড়ঙ্গে এবং বাইরে কাজ করছিলেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই কোভিড টেস্ট করানো হয়েছে। রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কাজ স্থগিত রাখা হয়েছে।

কলকাতা মেট্রোরেল কর্পোরেশন লিমিটেডের (কেএমআরসিএল) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে ১৫০ জনের পরীক্ষা হয়েছে তাঁদের মধ্যে সাধারণ কর্মী ও ইঞ্জিনিয়ার, সবাই রয়েছেন। তবে বিদেশি ইঞ্জিনিয়াররা সবাই নিজের দেশে ফিরে গিয়েছেন বলে তালিকায় তাঁরা কেউ নেই। রিপোর্ট আসার পর ফের কী ভাবে কাজ শুরু হবে, কেউ আক্রান্ত থাকলে তাঁদের বদলে নতুন কর্মী আনা হবে নাকি কম সংখ্যক কর্মী দিয়েই কাজ চালানো হবে-সেই নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#east west metro, #covid-19

আরো দেখুন