নিঃশব্দ ‘দেব’দূত! দুস্থ মাস্ক বিক্রেতার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন এই সাংসদ-অভিনেতা
বয়স আশি ছুঁইছুঁই হবে! হাঁটতে গেলে সঙ্গী ক্রাচ। কিন্তু এই বয়সেও পেটের দায়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে বেলঘড়িয়ার অমলবাবুকে। অভাব তাঁর নিত্যসঙ্গী। নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। এদিকে অর্থাভাব। এমতাবস্থায় দু’বেলা দু’মুঠো ভাত জোগাড় করতে তাই এই বয়সেও ক্রাচকে সঙ্গী করে বেরিয়ে পড়েন অমলবাবু। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দুয়ারে ঘুরেও সাহায্য মেলেনি। অতঃপর এভাবেই পথে ফেরি করে আয় হয় দু’পয়সা! সোশ্যাল মিডিয়াতেই দুস্থ অমলবাবুর কথা জানতে পারেন সাংসদ-অভিনেতা দেব (Dev)। দুস্থ বৃদ্ধের কষ্ট তাঁর মনেও দাগ কাটে। তাই নিজেই অমলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁকে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন তৃণমূল সাংসদ।
নিত্য অভাবের সঙ্গে যুঝে চললেও মনের জোর কিন্তু একচুলও নড়াতে পারেনি অমল ভৌমিককে। তাই সকাল হতেই বেরিয়ে পড়েন হাতে মাস্কের বোঝা নিয়ে। এমন করোনা আবহে তো মাস্ক অতি প্রয়োজনীয় বস্তু। তাই লোকেও কিনবেন। উপরন্তু জনসচেতনা প্রচারও হবে। কিন্তু অমলবাবুর যা বয়স, তাতে করে, সংক্রমণের ঝুঁকি তো আরও বেশি। কিন্তু ওই উপায় নেই। ছেলে বাজারে ফুল বিক্রি করেন। বাড়ি বেলঘড়িয়ার প্রফুল্লনগর রিক্রিয়েশন ক্লাবের সামনে। এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে এই শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে লড়াই করেও গোটা বেলঘড়িয়া জুড়ে হেঁটে হেঁটে মাস্ক বিক্রি করেন অমলবাবু। আক্ষেপ, শাসক দলের অনেক নেতা এবং কাউন্সিলের কাছে ঘুরেও ওনার সামান্যতম সুরাহা হয়নি! উপরন্তু কোনও বার্ধক্যভাতাও পান না। সবাই যখন দেখছি, দেখব বলে এড়িয়ে যান, সাংসদ দেব কিন্তু অন্য পথেই হাঁটলেন। বরং, ব্যক্তিগতভাবে বেলঘড়িয়ার অমলবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করলেন। অমলবাবুর ছেলে জানিয়েছেন, সাংসদ-অভিনেতা দেবের ব্যক্তিগত সচিব ফোন করে যোগাযোগ করেছেন।
প্রসঙ্গত, লকডাউনে দেবের হাত ধরেই বাড়ি ফিরেছেন ভিন রাজ্যে কাজ করা অগণিত বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকেরা। নেপাল থেকে স্বর্ণশিল্পীদের ফেরানোর পর রাশিয়া এমনকী দুবাই থেকেও সাংসদ অভিনেতার কাছে কাতর আরজি গিয়েছিল যে- “বাড়ি ফিরতে চাই, দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন!” তাঁদের অনুরোধ ফেলতে পারেননি তিনি। একেবারে ‘দেব’দূতের মতোই অবতরণ করেছেন, ঠিক যেমনটা সিনেমার নায়ক হিসেবে করে থাকেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তড়িঘড়ি ব্যবস্থা করেছেন। ‘বন্দে মাতরম মিশনে’ রাশিয়ার ডাক্তারি পড়ুয়াদের দেশে ফিরিয়েছেন। সবটাই করেছেন একেবারে নিঃশব্দেই। প্রচারের আড়ালে থেকে। এবার দুস্থ বৃদ্ধ মাস্ক বিক্রেতা অমলবাবুর পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন অভিনেতা তথা তৃণমূলের সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেব।