ইতিহাস যখন প্রোমোটারের গ্রাসে
উত্তর কলকাতা বলতেই বোঝায় একের পর এক বনেদি বাড়ি, সম্ভ্রান্ত ইতিহাস। সেরকমই একটি বাড়ি ১৩ নম্বর বিধান সরনির এই অট্টালিকা। প্রথম বাঙালি মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনী গঙ্গোপাধ্যায় ও দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়ি। এই বাড়ি বহু সম্ভ্রান্ত ইতিহাসের সাক্ষী। এই বাড়িতে পা পড়েছে বহু বিখ্যাত বাঙালির। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই ঐতিহ্যবাহী ইতিহাসের সাক্ষী এই বাড়িটিকে এবার ধুলোয় মিশে যেতে হবে প্রোমোটারের হাতে।
এরকম ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসক কাদম্বিনীদেবীর বাড়িও প্রোমোটারদের হাতে চলে যাওয়া বাঙালির কাছে অত্যন্ত লজ্জার। কাদম্বিনী দেবী যে শুধুই ডাক্তার ছিলেন তা নয়, তিনি ছিলেন জাতীয় কংগ্রেসের সর্বপ্রথম দুই নারীর মধ্যে একজন।
বাংলার বুকে এহেন প্রগতিশীল নারীর বাড়ি প্রোমোটারদের গ্রাসে। কর্নওয়ালি স্ট্রিটের এই বাড়ির সামনের অংশটি বেশ কয়েক বছর আগেই ভেঙে পোশাক বিপনী তৈরি করা হয়েছে। বাড়ির বাকি অংশের অবস্থাও শোচনীয়।
এই বাড়ি ছিল একসময় ব্রাহ্মসমাজের আখড়া। যারা সেই সময় ব্রাহ্ম ধর্ম গ্রহন করায় সমাজ চ্যূত হতেন, তাদের ঠাই হত এই বাড়িতে। সেই সূত্রেই দ্বারকানাথ এবং কাদম্বিনী এই বাড়ির ভাড়াটে হয়ে আসেন। সরাসরি মালিকানা না থাকলেও, তাঁরা এই বাড়িতেই কাটিয়েছেন তাঁদের বাকি জীবন। গ্রেড ২ হেরিটেজ হাউসের স্বীকৃতিও রয়েছে বাড়িটির। কিন্তু মালিকানা না থাকার জেরেই এমন ঐতিহ্যপূর্ণ ইতিহাস প্রোমোটারির বলি হতে বসেছে।