কোভিড মৃত্যুহার ১%-র নীচে নামাতে হবে, বাংলাকে পরামর্শ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের
পশ্চিমবঙ্গে করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার ১ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনতে রাজ্যকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিল কেন্দ্র। বাংলায় যে হারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে চলেছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক। রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে বলা হয়েছে, ভাইরাস সংক্রমণ দমন করার পাশাপাশি করোনায় মৃত্যুহার ১ শতাংশের নীচে নামিয়ে আনার চেষ্টা করে যেতে হবে।
যদিও এই মুহূর্তে করোনাভাইরাসে জাতীয় মৃত্যুহার ২.৫ শতাংশ। সেখানে বাংলায় মৃত্যুবার শনিবারের সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, ২.৭ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব লভ আগরওয়াল রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব এনএস নিগমকে চিঠি লিখে জানান, মৃত্যুর হার ১%-র কম রাখার জন্যে সাপ্তাহিক ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার পর্যবেক্ষণ করা দরকার। আরও কিছু পদক্ষেপ করার কথাও বলেন লভ আগরওয়াল।
রাজ্যের পাঠানো রিপোর্টের উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বাংলায় রোজ গড়ে প্রায় ১,৬০০ জন আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজ্যের অ্যাক্টিভ করোনা আক্রান্তের ৯৩% রিপোর্ট করা হয়েছে গত চার দিনে। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনার পাশাপাশি ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর ও হুগলির হটস্পটগুলির উপর অবিলম্বে নজর দিতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের যুগ্মসচিব বলেন, কলকাতায় কোভিড সংক্রমণ দিনে দিনে বাড়ছে। সংক্রমণের এই বিস্তারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হলে একটা শক্তিশালী কৌশল তৈরি করতে হবে। কোভিড টেস্টের জাতীয় গড়ের কাছে বাংলায় টেস্টের হার এখনও কম। তার উল্লেখ করে, কোভিড টেস্ট বাড়ানোর উপর জোর দিতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে গত তিন সপ্তাহ ধরে টেস্ট রিপোর্টে পজিটিভ হার অনেক বেড়ে যাওয়াই উদ্বেগের কারণ বলে মনে করে কেন্দ্র।
রাজ্য কনটেইনমেন্ট অঞ্চলগুলিতে লকডাউন করছে। সেখানে বেশি জোর দিচ্ছে। ওই অঞ্চলগুলিতেই টেস্ট বেশি করা হচ্ছে। কেন্দ্রের পরামর্শ, নিরাপদ বা বাফার অঞ্চলগুলিতেও কোভিড টেস্টের উপর জোর দিতে হবে। এতে সংক্রমণ দ্রুত বিস্তারের আগেই শনাক্ত করা যাবে।
নতুন সংক্রামিতদের সংস্পর্শে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের অন্তত ৮০ শতাংশকে যাতে দ্রুত শনাক্ত করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কোয়ারানটিনে পাঠানো যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ করেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের যুগ্মসচিব। তিনি আরও বলেন, প্রতি এক লক্ষ জনসংখ্যায় যাতে ১৪টি করে টেস্ট হয়, রাজ্যকে সেই লক্ষ্যে এগোতে হবে।
তবে, রাজ্যে দৈনিক কোভিড টেস্টের সংখ্যা আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। শনিবার মোট ৫৪টি ল্যাবে ১৩ হাজার ৪৬৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলে এখনও পর্যন্ত ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ৮১৩টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ৫.৮৩ শতাংশ।