বিজেপির পাশে মায়াবতী, রাজস্থান আবহেই ছত্রভঙ্গ বিরোধী শিবির
বিজেপি বিরোধী শিবির প্রায় ছত্রভঙ্গ হয়ে যাচ্ছে। সংসদের অন্দরে এবং বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অবস্থানে ইঙ্গিতটা মিলেছিল আগেই। এবার বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী প্রকাশ্যেই বিজেপির সমর্থনে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। রাজস্থানে বিজেপি বিধায়ক কেনাবেচার খেলায় নেমেছে, এই অভিযোগে কংগ্রেস যখন সরব ঠিক তখনই মায়াবতীর এই অবস্থান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কার্যত বিজেপির সুবিধার্থেই রাজস্থানে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি করেছেন দলিত নেত্রী।
শনিবার মায়াবতী বলেছেন, রাজস্থানে অস্থিরতা চলছে। এই অবস্থায় গণতন্ত্র রক্ষা করতে রাষ্ট্রপতি শাসনই একমাত্র উপায়। উল্লেখ্য, বিজেপি এটাই চাইছে। শনিবার সকালে বিজেপি মুখপাত্র সম্বিৎ পাত্রও একই সুরে রাজস্থান সরকারের বিরুদ্ধে ফোন ট্যাপিংয়ের অভিযোগ এনে সিবিআই তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছেন। মায়াবতীর সঙ্গে কংগ্রেসের দূরত্ব আগেই বেড়েছে। এবার উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে আচমকা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে একাই যোগী আদিত্যনাথের বিরোধী মুখ হিসেবে অবতীর্ণ হচ্ছেন। সেই সঙ্গে মায়াবতীকে তিনি পরোক্ষে অঘোষিত বিজেপি মুখপাত্র হিসেবে একাধিকবার বর্ণনা করে আক্রমণ করেছেন। শুধুই মায়াবতী নয়, সাম্প্রতিক কোনও বিজেপি বিরোধী বৈঠক কিংবা কর্মসূচিতেও অখিলেশ যাদব যোগ দেননি। কারণ, তিনিও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে রাজ্য রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করেছেন। মায়াবতী ও অখিলেশ যাদব, দু’জনেরই আশঙ্কা উত্তরপ্রদেশে ক্রমেই প্রিয়াঙ্কা ভাগ বসাতে শুরু করেছেন বিরোধী ভোটব্যাঙ্কে। রাজস্থান নিয়ে মায়াবতীর ক্ষোভ সহজবোধ্য। রাজস্থানে মায়াবতীর দলের ৬ জন বিধায়ক ছিলেন। সেই ৬ জনকে কংগ্রেস সম্প্রতি দলে টেনে নিয়েছে। তারপর থেকেই মায়াবতীর ক্ষোভ তুঙ্গে। সেই কারণেই বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস দল ভাঙানোর অভিযোগ তোলায় মায়াবতী গেরুয়া শিবিরের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বলেছেন, কংগ্রেসের মুখে দল ভাঙানোর নালিশ শোভা পায় না।
মায়াবতী এভাবে বিজেপির পক্ষে সওয়াল করায় জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী শিবির যে ক্রমশ হীনবল হয়ে যাচ্ছে সেটা প্রমাণিত। কংগ্রেস ছাড়া এখন বিজেপি বিরোধী শিবিরে বৃহৎ দলগুলির মধ্যে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, শিবসেনা, এনসিপি, ডিএমকে। তেলুগু দেশম রাজ্য ও জাতীয় স্তরে এখন দুর্বল। এর মধ্যে আবার প্রতিটি ইস্যুতেই শিবসেনা যে বিজেপির বিরুদ্ধে এমনটা নয়। বিজু জনতা দল, তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতি, ওয়াই এস আর কংগ্রেস, এই তিনটি দল এনডিএ জোটে না থেকেও বিজেপির সমর্থক হিসেবেই বারংবার অবস্থান গ্রহণ করেছে। সমাজবাদী পার্টিরও কট্টর বিজেপি বিরোধী অবস্থান নেই। এসবের অন্যতম কারণ, মায়াবতী ও মুলায়ম, উভয়ের বিরুদ্ধে রয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার মামলা। লালুপ্রসাদ যাদব রাঁচির জেল থেকে কিছুতেই মুক্ত হলেন না, সেটাও আশঙ্কার বড় কারণ।