এবার রাখীবন্ধনের সাথেই হবে ‘মুখবন্ধন’ কর্মসূচি, উদ্যোগী রাজ্য সরকার
হাতে রাখী, মুখে মাস্ক। কোভিড যোদ্ধাদের কুর্নিশ জানাতে তৈরি হচ্ছে ক্রীড়া ও যুব-কল্যাণ দপ্তর। সেই সঙ্গে থাকছে স্বাস্থ্য সচেতনতায় রাজ্যবাসীকে শামিল করার বার্তাও।
আগামী ৩ আগস্ট রাখীবন্ধন উৎসব। কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘শপথ গ্রহণের দিন’ হিসেবে পালন করতে চাইছে রাজ্য। শপথের মূল কথা দু’টি—এক, স্বাস্থ্য সচেতনতা। দুই, মহামারীর কঠিন সময়ে গোটা বাংলাকে একসূত্রে বাঁধা। অর্থাৎ, সম্প্রীতির বাতাবরণে সর্বস্তরের মানুষকে ঐক্যের আহ্বান। শপথ গ্রহণের সুরটাও অনেক আগেই বেঁধে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। তাঁর তৈরি ‘বাংলা আমার মা’ ক্যাচ লাইন সাঁটানো মাস্ক বিলি হবে রাখী বন্ধনের দিন। এর জন্য ‘মুখবন্ধন’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ক্রীড়া ও যুব-কল্যাণ দপ্তর। কর্মসূচি পালিত হবে কলকাতাসহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রথমসারির কোভিড-যোদ্ধা চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিস ও সাফাইকর্মীদের হাতে রাখী বেঁধে মুখে মাস্ক পরানোর পরিকল্পনা নিয়েছে দপ্তর। সব মিলিয়ে বিলি করা হবে ‘থ্রি লেয়ার’ বিশিষ্ট সাড়ে পাঁচ লক্ষ মাস্ক। প্রাপকদের তালিকায় থাকছে ছাত্রছাত্রী, আশাকর্মী, একশো দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও।
শুধু তাই নয়, কোভিড প্রতিরোধী সরঞ্জাম তৈরিতে রাজ্যকে স্বনির্ভর করে তোলার বার্তাও রয়েছে এই ‘মুখ বন্ধন’ কর্মসূচির মধ্যে। মারণ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের শুরুতে পর্যাপ্ত মাস্ক ও পিপিই পাঠাতে কেন্দ্রকে বারবার অনুরোধ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, তাতে খুব একটা কর্ণপাত করেনি মোদি সরকার। তার পরেই মাস্ক, পিপিইসহ অন্যান্য সামগ্রী তৈরিতে উদ্যোগী হন তিনি। সেই মতো ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প দপ্তর কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাত্র তিন মসেই কোভিড-রোধী সরঞ্জাম তৈরিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠে বাংলা। রাখীবন্ধন উৎসবে পাঁচ লক্ষ মাস্ক বিলিও মুখ্যমন্ত্রীর এই বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ। পরবর্তী পর্যায়ে আরও তিন কোটি মাস্ক তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধাপে ধাপে সেগুলি বিলি করা হবে রাজ্যজুড়ে।
প্রতিবছর রাখীবন্ধনের দিনটিকে ‘সংস্কৃতি দিবস’ হিসেবে পালন করে ক্রীড়া ও যুব-কল্যাণ দপ্তর। মূলত, সম্প্রীতির শপথ নেওয়া হয় একে অপরের মধ্যে রাখী পরিয়ে। কোভিডের ক্রান্তিকালে রাখীবন্ধন উৎসবের রঙ এবার অনেকটাই ফিকে হতে বসেছিল। কিন্তু ক্রীড়া দপ্তরের ‘মুখবন্ধন’ কর্মসূচি উৎসবের বাড়তি মাত্রা এনে দিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণ হল, রাখীর সঙ্গে মাস্ক পরিয়ে সম্প্রীতির আবহে স্বাস্থ্য সচেতনতার আন্দোলনে রাজ্যবাসীকে শামিল করা।