ভুল করে BJP বা অন্য দলে গিয়ে থাকলে ফিরে আসুন: মমতা
শহিদ দিবসের ভার্চুয়াল সভা থেকে স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমাতেই বিজেপির দিকে আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘বাংলাকে অপমান করলে তার বদলা নেবই। বদলা নেব মানবিকতা দিয়ে। বহিরাগতরা বাংলাকে শাসন করতে পারবে না। বাংলাকে শাসন করবে বাংলার মানুষ। বহিরাগতরা নয়।’ কিন্তু বিজেপি যে তৃণমূলের ঘর ভাঙানোর কাজ বহুদিনই চালাচ্ছে, তা স্পষ্ট। মুকুল রায়ের মতো বড় নেতা চলে গিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। বিধানসভার আগে সবুজ ঘর ভাঙার আশঙ্কা করছেন অনেক তৃণমূল নেতাই। সেই দিকেও এদিন নজর দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ভার্চুয়াল সভা থেকে তিনি দলত্যাগী নেতাকর্মীদের উদ্দেশে স্পষ্টতই আহ্বান জানালেন। বললেন, ‘ভুল করে যদি কেউ বিজেপি বা অন্য দলে চলে গিয়ে থাকেন, তাহলে ফিরে আসুন। মানুষের জন্যে কাজ করতে হলে তৃণমূলেই পারবেন।’ যদিও করোনাকালে রেশন, আম্পানের পর ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি প্রসঙ্গে কড়া অবস্থান নিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বিভিন্ন জেলার একাধিক নেতা-কর্মীদের দল থেকে বহিষ্কারও করেছেন তিনি।
তবে, তৃণমূলের একাংশের মত, বিধানসভা ভোটের আগে ঘর ভাঙলে তা যে দলের জন্যে একেবারেই ভালো হবে না, তা বিলক্ষণ জানেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকী স্থানীয় স্তরের নেতারা বিজেপির সঙ্গে হাত মেলালে তার প্রভাব যে ভোটের বাক্সে পড়বেই, তাও অজানা নয় তৃণমূল নেত্রীর। তাই পুরনো কর্মীদের ফের দলে ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এদিনের সভা থেকেও অবশ্য তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, ‘আমার দলে কর্মীরাই সম্পদ। নতুন প্রজন্মকে আমি তৈরি করে যাব। তাঁরাই মানুষের হয়ে কাজ করবে।’ কিন্তু বিভিন্ন জেলায়-জেলায় যে সব নেতা-কর্মীরা দল ছেড়ে চলে গিয়েছেন, তাঁরা কি আদৌও ভোটের আগে আর ফিরবেন? সন্দিহান তৃণমূলের অনেক বড় নেতারাও।
বিজেপিকে অবশ্য এদিন তিনি তুলোধনা করেছেন। বলেছেন ‘কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে বলে গায়ের জোর দেখাচ্ছে। উন্নয়নের কথা কখনও বলে না। সারাক্ষণ শুধু সর্বনাশের কথা বলে। রাজ্যে গুন্ডামি, দাঙ্গা, আগুন জ্বালানোর কথা বলে। মানুষকে শান্তিতে থাকতে দেয় না।’ শহিদ দিবসের ভার্চুয়াল সভা থেকে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের কাজ পুরোদমে শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সরকার মানুষের উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ করেছে তার খতিয়ান দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি। সেইসঙ্গে দলত্যাগী কর্মী-নেতাদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে ঘর গোছানোর কাজও শুরু করে দিলেন।