কোভিড সেরে গেলেও মানুষ কতটা সুরক্ষিত থাকবে? ধন্ধে বিশেষজ্ঞরা
একই মানুষের দ্বিতীয় বার করোনা-সংক্রমণের কোনও নজির ভারতে এখনও নেই ঠিকই। কিন্তু কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠার পরে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরে তৈরি-হওয়া অ্যান্টিবডি কত দিন কর্মক্ষম থাকবে, তা নিয়ে রীতিমতো সন্দিহান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারাই। তাই তাঁরা বলছেন, এক বার কোভিড হয়ে গেলে ফের সংক্রমণের ঝুঁকি নেই— এমন না-ভাবাই ভাল। বরং সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে-ওঠা মানুষদেরও আর পাঁচ জনের মতো যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনে চলতে হবে।
চিন বা দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশে দ্বিতীয় বার করোনা-সংক্রমণের কিছু ঘটনা ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ডিজ়িজ় কন্ট্রোলের ডিরেক্টর সুজিতকুমার সিংহ আজ বলেন, ‘‘ভারতে এখনও কারও দ্বিতীয় বার কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য আসেনি। কিন্তু করোনার বিরুদ্ধে তৈরি-হওয়া অ্যান্টিবডি ঠিক কত দিন শরীরে কর্মক্ষম থাকছে, তা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন। কারণ আমরা নিশ্চিত নই।’’
মানবদেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি কত দিন কর্মক্ষম থাকতে পারে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদেরও নানা মত। কেন্দ্রের এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, দেশে প্রথম সংক্রমণের খবর মিলেছিল ফেব্রুয়ারিতে। প্রথম দিকের রোগীদের সুস্থ হওয়ার পরে এখনও ছ’মাসও কাটেনি। ফলে কার শরীরে কত দিন অ্যান্টিবডি সক্রিয় থাকছে, তা নিয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। সেই কারণেই সুজিতকুমার সিংহ বলছেন, ‘‘কোভিড সেরে যাওয়া মানেই আমি সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত হয়ে গেলাম— এমনটা না-ভাবাই ভাল।’’
আজ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে দাবি করা হয়েছে, গত মাসের তুলনায় ভারতে মৃত্যুহার প্রায় এক শতাংশ কমেছে। গত মাসে যেখানে ৩.৩৬ শতাংশ মৃত্যুহার ছিল, এ মাসে তা কমে ২.৪৩ শতাংশ হয়েছে। প্রতি দশ লক্ষে ভারতে যেখানে ২০.৪ জন মারা যাচ্ছেন, সেখানে বিশ্বের গড় হল ৭৭ জন।
সংক্রমণের হার আগের চেয়ে কমেছে বলে দাবি করা হলেও গত চব্বিশ ঘণ্টায় দেশে সংক্রমিত হয়েছেন ৩৭,১৪৮ জন। হালে এই সংখ্যাটা চল্লিশ হাজারও পেরিয়েছে। কাজেই এ দিন নতুন সংক্রমণের রেকর্ড হয়নি। আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত দেশে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ১১,৫৫,১৯১। অ্যাক্টিভ রোগী ৪,০২,৫২৯ জন। আরও ৫৮৭ জনের মৃত্যুতে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮,০৮৪। এখন পর্যন্ত দেশে সুস্থ হওয়ার হার ৬২.৭২ শতাংশ, যা বেশ কিছু সময় ধরে এক জায়গায় থাকাটা কেন্দ্রের কাছে উদ্বেগের। রাতে আন্তর্জাতিক সমীক্ষায় ভারতে মোট সংক্রমণ ১১.৯২ লক্ষ পেরিয়েছে।
গত চব্বিশ ঘণ্টায় গোটা দেশে ৩,৩৩,৩৯৫টি পরীক্ষা হয়েছে। এ মাসেই তা পাঁচ লক্ষ করার পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রের। নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদকুমার পল বলেন, ‘‘প্রথমে পাঁচ লক্ষ ও পরের ধাপে দিনে দশ লক্ষ পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোগী বৃদ্ধির সঙ্গে পরীক্ষাও বাড়ানো হয়েছে।’’