পূর্ব লাদাখে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন চিনের
লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা কমার কোনও লক্ষণ নেই। প্রায় আড়াই মাস ধরে সেখানে উত্তেজনা চলছে। সূত্রের খবর, পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে চিন প্রায় ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। মাঝে খবর মিলেছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে প্রায় ১-২ কিলোমিটার দূরে সরে গিয়েছে চিনা সেনা। সীমান্তে সংঘাত মেটাতে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই ভিডিয়ো কলে প্রায় দুই ঘণ্টা কথাও বলেছিলেন। তার পরপরই গালওয়ান উপত্যকা থেকে তাঁবু, সেনা সহ যুদ্ধের অন্য সরঞ্জাম সরাতে শুরু করে চিন, এমন খবরও পাওয়া গিয়েছিল। মনে করা হচ্ছিল, এতে ভারত-চিন সীমান্তে উত্তেজনা কমবে। কিন্তু সেই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত হল। কথা রাখেনি চিন।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা কমানো বা সেনা পিছোনোর পরিবর্তে উল্টে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে প্রায় ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন। বিদেশমন্ত্রক ও কর্পস কমান্ডার স্তরে বেশ কয়েকবার ভারত ও চিনের মধ্যে সেনা পিছোনো এবং কমানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। গত ১৪-১৫ জুলাই কর্পস কমান্ডার লেভেলের বৈঠকে ঠিক হয়েছিল দু’দেশ সেনা পিছোবে। কিন্তু সেইসব আলোচনাকে কোনও গুরুত্ব দিতে নারাজ চিন।
যেকারণে পূর্ব লাদাখের ফ্রিকশন পয়েন্ট থেকে সেনা সরানো তো দূর অস্ত, উল্টে আরও বেশি সংখ্যক সেনা মোতায়েন করল চিন। ফিঙ্গার ৫ এলাকা থেকেও সরতে ইচ্ছুক নয় লালফৌজ। পূর্ব লাদাখের হট স্প্রিং ও গোগরা পোস্ট এলাকায় চিন যথেষ্ট নির্মাণ কাজ করেছে। এক সেনা আধিকারিক জানিয়েছেন, সেনা পিছোনো বা কমানোর কোনও লক্ষণ নেই চিনের। পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে সমরাস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে চিন।
উল্লেখ্য, পূর্ব লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে গত প্রায় আড়াই মাস ধরে উত্তেজনা চলছে। ১৫ জুন লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা সেনার সঙ্গে সংঘর্ষে শহিদ হন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তারপর থেকেই দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। বিদেশমন্ত্রকের পাশাপাশি স্থানীয় পর্যায়ে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা হলেও কোনও লাভ হয়নি। সংঘর্ষের পরপর লেহ ও লাদাখ সফর করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি চিনকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন।
এছাড়া সম্প্রতি লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীর সফরে করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। লাদাখ সফরে গিয়ে চিনের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সেখানে তিনি বলেন, ‘ভারতের এক ইঞ্চি জমিও কেউ কেড়ে নিতে পারবে না।’ তার পরপরই খবর মিলল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে আরও সেনা মোতায়েন করেছে চিন।