উত্তরপ্রদেশে সাংবাদিক হত্যার প্রতিবাদে সরব রাহুল-মমতা
মাথায় গুলি লেগে গুরুতর আহত হয়েছিলেন তিনি। আজ সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে উত্তরপ্রদেশের সাংবাদিক বিক্রম জোশীর। গত সোমবার রাতে গাজ়িয়াবাদে দুই মেয়েকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে বাড়ি ফেরার সময়ে এক দল দুষ্কৃতী আক্রমণ করে বিক্রমকে।
সাংবাদিককে গুলি করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরে গত কালই সরব হয়েছিলেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। উত্তরপ্রদেশ সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে একহাত নিয়েছিলেন তিনি। আজ বিক্রমের মৃত্যুর পরে একাধিক দল রাজ্য প্রশাসনের সমালোচনা করেছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটারে সরব হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিএসপি নেত্রী মায়াবতীও বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন।
বিক্রমের পরিবারের অভিযোগ, কিছু দিন আগে থানায় গিয়ে নিজের ভাইঝিকে হেনস্থার নালিশ করেছিলেন বিক্রম। হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কিছুই করেনি। উল্টে অভিযুক্তরাই এসে বিক্রমকে গুলি করে যায়। ঘটনাটি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ায় বিক্রমের হামলাকারীদের
মধ্যে ন’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে আকাশ নামে এক মূল অভিযুক্ত এখনও ফেরার। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না-নেওয়ার জন্য দুই পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আজ বিক্রমের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারকে দশ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে আদিত্যনাথের সরকার।
কিন্তু বিক্রমের পরিবার পুলিশ-প্রশাসনের বিরুদ্ধে ফুঁসছে। আজ তাঁরা বিক্রমের দেহ ময়না-তদন্তের জন্য নিয়ে যেতেও বাধা দেন। বিক্রমের এক দল সহকর্মী গাজ়িয়াবাদে এই খুনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-অবস্থানে অংশ নেন।
রাহুল আজ টুইটারে বিজেপির নাম না-করেই লিখেছেন, ‘‘বিক্রম জোশীকে খুন করা হল কারণ ভাইঝির হেনস্থা দেখে প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি। ওঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা। ওরা রামরাজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গুন্ডারাজ চালাচ্ছে।’’ প্রায় একই সুরে পরোক্ষে বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন মমতাও। তাঁর টুইট, ‘‘একজন নির্ভীক সাংবাদিক, যাঁর আজ মৃত্যু হল, তাঁর পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা। উত্তরপ্রদেশে নিজের ভাইঝির হেনস্থাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে আক্রান্ত হলেন বিক্রম। গোটা দেশে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবাদী কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে, সাংবাদিকেরাও ছাড় পাচ্ছেন না, আতঙ্কের বিষয়।’’ প্রিয়ঙ্কা আজ হিন্দিতে টুইট করে লিখেছেন, ‘‘ভাইঝির যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে মুখ খুলে বিক্রম জোশীজিকে নিজের মেয়েদের সামনে গুলি খেতে হল। গুরুতর আঘাতের ফলে আজ ওঁর মৃত্যু হয়েছে। বিজেপির জঙ্গলরাজ এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, সাধারণ মানুষ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে যাওয়ার সাহসটুকুও পাবেন না।’’ মায়াবতীও টুইটারে সরাসরি যোগী সরকারের দিকে আঙুল তুলেছেন আজ। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে অপরাধ বাড়ছে। মেয়েরা সুরক্ষিত নন। ঠিক যেন জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আশা করি ক্ষতিপূরণের টাকা পেতে ওঁর পরিবারকে এ-দিক, ও-দিক দৌড়তে হবে না। আর সেটা দ্রুত পাবেন।’’