করোনা আক্রান্ত উত্তরবঙ্গের সিপিএম বিধায়ক রফিকুল ইসলাম
উত্তরবঙ্গের আরও এক বিধায়ক করোনায় আক্রান্ত হলেন। হরিরামপুরের সিপিএম বিধায়ক রফিকুল ইসলামের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে। তাঁর শরীরে কিছু উপসর্গও রয়েছে।
গতকাল রাতে মালদা মেডিকেলের ভিআরডিএল থেকে তাঁর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ৬৭ বছর বয়সী রফিকুল সাহেব ২০ জুলাই লালার নমুনা দেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য দলের হয়ে মিছিল-মিটিং, ডেপুটেশন সবেতেই তিনি অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। সেই সমস্ত কর্মসূচিতে অংশ নিতে গিয়ে তিনি সংক্রামিত হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
তাঁকে বালুরঘাট কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর সংস্পর্শে কারা কারা এসেছিলেন তা খতিয়ে দেখছে স্বাস্থ্য দপ্তর। এর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার কুমারগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক তোরাফ হোসেন মন্ডলও করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন। এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় নতুন করে ৩৩ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এরমধ্যে জেলা সদর শহর বালুরঘাটেই সংক্রামিত হয়েছেন ১৭ জন। এছাড়া বালুরঘাট গ্রামীণ এলাকায় ৮, কুশমন্ডিতে ৪ ও হরিরামপুরে ৪ জন সংক্রামিত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবর, ১৯, ২০ ও ২১ জুলাই আক্রান্তদের সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের ভিআরডিএলে পাঠানো হয়েছিল। গতকাল রাতে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, ৩৩ জনের রিপোর্ট পজিটিভ। আক্রান্তদের অধিকাংশেরই ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই ও তাঁরা উপসর্গহীন বলে জানা গিয়েছে। এই ৩৩ জন নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪৬। আক্রান্তদের মধ্যে ৩৯৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।
বালুরঘাট আদালতের পাঁচজন কর্মী সংক্রামিত হয়েছেন। এছাড়া বালুরঘাট শহরের বটকৃষ্ণ পল্লী, পাওয়ারহাউজ, বেলতলা পার্ক, চকভবানী, চকভৃগু, উত্তর চকভবানী, নামাবঙ্গিতে একজন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মঙ্গলপুরে তিনজন ও নারায়ণপুরে দুজনের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বালুরঘাট ব্লকের পরানপুরে দুজন, বাদামাইল, চিঙ্গিশপুর, গঙ্গাসাগর, কামারপাড়া, মাতৃছাব্রাদুল ও রঘুনাথপুরে একজন করে সংক্রামিত হয়েছেন। হরিরামপুরে বিধায়ক সহ চারজন, কুশমন্ডিতে চার জন সংক্রামিত হয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবারদিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। ওইদিন রাতে তিনি নিজেই বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় জানান। ফেসবুকে ‘আমি করোনা পজেটিভ’ লিখে পোস্ট করেন তিনি। এরপরই জেলায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। উদয়নবাবুর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৮ জুলাই দিনহাটা মহকুমা শাসকের অফিসের আধিকারিকদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেদিন পুরসভার প্রশাসক উদয়ন গুহরও লালার নমুনা নেওয়া হয়।
সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার তৃণমূল বিধায়ক সমরেশ দাস করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর আগে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জের বিধায়ক তোরাফ হোসেন মণ্ডলও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের বিধায়ক মহম্মদ আখরুজ্জামানের করোনা রিপোর্টও পজিটিভ আসে। পরে তাঁর স্ত্রী, পুত্র, গাড়ির চালক ও নিরাপত্তারক্ষীর শরীরেও করোনার সংক্রমণ মেলে। তাঁরা প্রত্যেকেই কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এর আগেও রাজ্যের শাসকদলের একাধিক বিধায়ক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু ও তাঁর পরিবারের কয়েকজন সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তাঁরা সকলেই সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। এদিকে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ফলতার তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। পানিহাটির বিধায়ক তথা বিধানসভার তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষও করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছিলেন। তবে তিনিও সুস্থ হয়ে উঠেছেন। সম্প্রতি মালদার বৈষ্ণবনগরের বিজেপি বিধায়কও করোনায় আক্রান্ত হন।