মুকুলকে ছাড়াই কেন্দ্রীয় বৈঠকে বিজেপি
মুকুল রায়কে ছাড়াই হল বিজেপির নির্বাচন প্রস্তুতি বৈঠক। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে ৩ দিন বৈঠক চলছে রাজ্য বিজেপি নেতাদের। আজ একুশের বিধানসভা নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবেই সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না বিজেপি নেতা মুকুল রায়।
খুব স্বাভাবিকভাবেই এবিষয়টা চোখ এড়ায়নি কারোরই। শুরু হয়ে যায় আলোচনাও। যদিও মুকুল রায়ের না থাকাকে ‘আমল’ দিচ্ছেন না বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “মুকুল রায় কাল মিটিংয়ে ছিলেন। করোনার কারণে উনি কয়েকদিন দূরে দূরে থাকছেন। কালই বলেছেন, আজ আসতে পারবেন না। সম্ভবত কলকাতা চলে যাচ্ছেন।” বিষয়টা কি শুধু করোনা কেন্দ্রিক না এর পিছনে অন্য কোনও ‘সমীকরণ’ রয়েছে? তা অবশ্য সময় বলবে। সূত্রের খবর, গতকাল শিবপ্রকাশ একটা রিপোর্ট পেশ করেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়দের সামনে। রিপোর্টে বলা হয়, এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে ১৯০টির বেশি আসনে বিজেপি জিততে পারবে। দিলীপ ঘোষ তা সমর্থন করেন। কিন্তু মুকুল রায় এই রিপোর্টের খুব একটা যৌক্তিকতা দেখেননি। তাই আজ বৈঠকে যাননি তিনি। উপরন্তু কাল-ই ফিরে আসছেন। অন্যদিকে, আজকের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর উপস্থিত থাকার খবর আবার ছিল না দিলীপ ঘোষের কাছে। বিজেপি রাজ্য সভাপতির কথায়, “শোভনের এই মিটিংয়ে থাকার কথা নয়। কে ডেকেছে জানি না! আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি।”
এদিকে সূত্রের খবর, আজকের বৈঠকে রাজ্য নেতৃত্বের কাজকর্ম নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বৈঠকে উত্তরবঙ্গের বিষয়ে কথা হয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের স্পষ্ট নির্দেশ, “আন্দোলনের ঝাঁঝ বাড়াতে হবে। কোনও আঘাত আসলে সেটা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝে নেবে। মার খেলে মার খান, পাল্টা দিতেও শিখুন। সামনাসামনি লড়াই করুন। পিছু হঠার জায়গা নেই। পুরনো যাঁরা কমিটিতে ছিলেন, তাঁরা অনেকে নতুনদের সাহায্য করছেন না। এরকম করলে চলবে না। সবাই একসাথে কাজ করুন। মানুষের কাছে আরও যান।
বুথভিত্তিক জনসংযোগ খুব খারাপ। ছোট-বড়ো ইস্যু বলে কিছু হয় না। এলাকাভিত্তিক সমস্ত ইস্যুকে কাজে লাগান। দলের বাইরেও যদি কেউ আক্রান্ত হয়, তাঁদের পাশে গিয়েও দাঁড়ান। তাঁদের নিয়েও আন্দোলন করুন।”
উল্লেখ্য, একদিকে যখন দিল্লিতে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে নির্বাচনের ঘুঁটি সাজাচ্ছেন, ঠিক তখনই তৃণমূলে সাংগঠনিক স্তরে ব্যাপক রদবদল ঘটান দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও তাকে পাত্তা দিতে নারাজ দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “বিজেপির স্টাইলে দল সাজানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই অদলবদল করে কোনও লাভ নেই।” একইসঙ্গে রাজ্য কমিটিতে ছত্রধর মাহাতর স্থান পাওয়া নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “ছত্রধর মাহাত তো প্রথম থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে যুক্ত। যখন প্রয়োজন হয়েছে, তখন তাঁকে ডেকে নিয়েছেন। আবার যখন মনে হয়েছে, তখন তাঁকে বেরও করে দিয়েছেন। এখন তাঁকে আবার রাজ্য কমিটিতে ডেকেছেন। ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত একজনকে রাজ্য কমিটিতে ডেকেছেন, এতেই বোঝা যায় তৃণমূলের নীতি, নৈতিকতা বলে কিছুই নেই। সবটাই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে থাকলেই সাত খুন মাফ!”