রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

১৪ কোটির বেশি কর্মদিবস, ১০০ দিনের কাজে এগিয়ে বাংলাই

July 26, 2020 | 2 min read

করোনা-লকডাউন জর্জরিত সময়ে গ্রামীণ অর্থনীতির হাল ফিরিয়েছে ১০০ দিনের কাজ। আর এই কাজে পুরোপুরি সফল পশ্চিমবঙ্গ। মাত্র তিন মাসে লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি পূরণ হয়ে গিয়েছে। প্রথম দফার ৮০ শতাংশের বেশি বরাদ্দ খরচ করে ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কেন্দ্র এবং রাজ্য মিলিয়ে চলতি অর্থবর্ষে এই খাতে মোট ৫ হাজার ৩৯৬ কোটি ৮৭ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৪ হাজার ৩৬৮ কোটি ৫৫ লক্ষ ১১ হাজার টাকা এখনও পর্যন্ত খরচ করে ফেলেছে রাজ্য। অতীতে প্রায় প্রতি বছর এই প্রকল্পে লক্ষ্যমাত্রা ছাপিয়ে অতিরিক্ত কর্মদিবস তৈরির নজির গড়াটা একরকম অভ্যাসে পরিণত করেছে বাংলা। তার জন্য বাড়তি টাকাও দিয়েছিল কেন্দ্র। অগ্রগতির হার বলছে, এবছর নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও তার অন্যথা হবে না। ফলে বাড়তি বরাদ্দের জন্য চাপ বাড়ছে কেন্দ্রীয় সরকারের উপর।

গত অর্থবর্ষের (২০১৯-’২০) শেষটা হয়েছিল লকডাউনে। প্রথম দফার সেই লকডাউন শেষে ২২ এপ্রিল থেকে গ্রামীণ এলাকায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরুর অনুমতি দিয়েছিল মোদি সরকার। তারপর থেকেই রাজ্যে ১০০ দিনের কাজে গতি আসে। পরিযায়ী শ্রমিকরা দলে দলে রাজ্যে ফেরার পর তাদেরও এই প্রকল্পের অধীনে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়। ফলে কাজের পরিধি অনেক বেড়েছে। সেই ছবিটাই উঠে এসেছে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পের (এমজিনারেগা) কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইটে। জানা গিয়েছে, এবছর শ্রম বাজেটে পশ্চিমবঙ্গকে ২২ কোটি কর্মদিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। লকডাউনে কাজের গতি কমলেও ২২ এপ্রিল থেকে ২৪ জুলাই—তিন মাসের মধ্যে ১৪ কোটি ৬২ লক্ষ ৬৮ হাজার কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রা ৬৬.৪৯ শতাংশ পূরণ হয়ে গিয়েছে। গত বছর এই সময়ে যা ছিল এর অর্ধেকের কম। চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত ৫৩ লক্ষ ১১ হাজার পরিবার কাজ পেয়েছে। ব্যক্তি হিসেবে সংখ্যাটা ৭২ লক্ষ ১৩ হাজার। প্রতিটি বাড়ি তিন মাসে গড়ে প্রায় সাড়ে ২৭ দিন কাজ পেয়েছে। পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রের খবর, এই গতি বজায় থাকলে আর তিন মাসের মধ্যে মূল লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে যাবে রাজ্য।

ওয়েবসাইটের হিসেব বলছে, প্রথম দফায় এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে ৪ হাজার ৬২১ কোটি ৯৮ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা। আর রাজ্যের ম্যাচিং গ্রান্ট ৭৭৪ কোটি ৮৮ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। তার ৮০.৯৫ শতাংশ খরচ হয়ে গিয়েছে। সাধারণত, অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদ এই প্রকল্পের বরাদ্দের পুনর্বিবেচনা করা হয়। এদিকে, করোনার কারণে গরিব কল্যাণ রোজগার যোজনায় চার মাসে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ করছে মোদি সরকার। তারপর বাড়তি বরাদ্দ হবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে প্রশাসনিক মহলে। রাজ্যের এই নতুন নজির নিয়ে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় গরিব মানুষকে সুরাহা দিতে ১০০ দিনের কাজের সুযোগ করে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পরিযায়ী শ্রমিকদেরও এই কাজে যুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে শ্রমদিবস বেড়েছে। গ্রামের মানুষকে কাজ পাইয়ে দেওয়াই আমাদের সরকারের মূল লক্ষ্য।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #100 days Work

আরো দেখুন