‘আগামীর মমতা’, পড়াশোনার খরচ আসবে দুধের ডিপোয় ডিউটি করে, উদ্যোগী রাজ্য
একসময়ে যোগমায়া দেবী কলেজে পড়ার খরচ তুলতে কাকভোরে উঠে হরিণঘাটা সরকারি ডিপো থেকে দুধ বিক্রি করেছেন। লিটারপিছু কমিশন থেকে মাসে আসত মাত্র ৪০ টাকা। সেই থেকেই জীবন সংগ্রামের শুরু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর মমতার সেই লড়াইকে পথিকৃৎ করেই বর্তমান প্রজন্মের জন্য এগিয়ে এল প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর। রাজ্যের লক্ষ্য একটাই, দরিদ্র ছাত্রীদের লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করতে যেন কোনও অসুবিধা না হয়। আর তাই চিহ্নিত করা হচ্ছে মাদার ডেয়ারির ১০০টি স্টল। প্রতিদিন সকালে ঘণ্টা দু’য়েক সেই সমস্ত স্টলে বসে, দুধ বিক্রি করে পড়াশোনার খরচ উপার্জন করতে পারবেন আগামীর ‘মমতা’রা। বাংলার ছাত্রীদের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মস্তিষ্কপ্রসূত ‘কন্যাশ্রী’ এবং ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পের অসামান্য সাফল্যের পর দুধের স্টল সংক্রান্ত এই প্রকল্পও যথেষ্ট সমাদৃত হবে বলেই আশাবাদী দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। উচ্ছ্বসিত স্বপনবাবুর কথায়, ‘প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি হয়ে গিয়েছে। আইনি প্রক্রিয়াও চলছে। প্রকল্পের নামকরণের জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব। তাঁর ছাড়পত্র মিললে এই প্রকল্প শুরু করা হবে দক্ষিণ কলকাতা থেকে। যেখানে জীবন সংগ্রাম শুরু করেছিলেন দিদি।’
কারা পাবেন এই সমস্ত স্টল? প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, তফসিলি জাতি ও উপজাতিভুক্ত এবং আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের ছাত্রীরাই অগ্রাধিকার পাবেন। আগ্রহীদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া হবে। মন্ত্রীর কথায়, ‘লিটারপিছু কমিশন মিলবে। সেই কমিশন দেড় থেকে দু’টাকার মধ্যে থাকবে। দিনে ৮০-১০০ লিটার দুধ বিক্রি করতে পারলেই মাসে যে অর্থ আসবে, তাতে পড়াশোনার খরচ উঠে আসবে।’ দপ্তরের বক্তব্য, ছাত্রীদের আত্মনির্ভর করে তুলতে এই প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। আপাতত ১০০ স্টল দিয়ে এই প্রকল্পের পথ চলা শুরু হচ্ছে। আগামী দিনে রাজ্যের সব প্রান্তের ছাত্রীদের কথা ভেবে এই সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।