মানুষের পাশে দীপ, ২০০০ কিলোমিটার দূর থেকেও কলকাতায় পৌঁছল ওষুধ
পেশায় কাপড়ের ব্যবসায়ী। কিন্তু করোনাভাইরাসের কালবেলায় আচমকাই বহু অচেনা মানুষের কাছেই তিনি হয়ে উঠেছেন ত্রাতার মতো। থানে নিবাসী দীপ শাহ বেশ কিছুদিন ধরেই সেখানে শুনতে পেয়েছিলেন কোভিড ১৯ প্রতিরোধকারী ওষুধ রেমডেসিভিরের অভাব রয়েছে গোটা শহরে। সেই খবর জানার পর তিনি যে শুধু নিজের এলাকাতেই সাহায্য করেছেন তা নয়, দু হাজার সাতাশ কিলোমিটার দূরে বসে থাকা কলকাতার করোনা রোগীর জন্যও ওষুধের ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
দীপ শাহ প্রতিদিন কলকাতা থেকে শতাধিক ফোন পেতে শুরু করেন। রোগীদের জন্য করোনা প্রতিরোধকারী ওষুধের খোঁজেই আসত সেই ফোনগুলি। নিজের প্রয়োজনে একদিন রেমডেসিভির কিনতে গিয়ে না পাওয়ার ফলেই অন্য মানুষের জন্যেও তাঁর মানবিক মন সাড়া দিয়েছিল। মহামারীর সময় তাঁর মতোই কত মানুষ যে ওষুধ জোগাড় করতে পারছেন না সেকথা ভেবেই তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ানোর পরিকল্পনা করেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার এক বন্ধুর কাকিমার জন্য প্রথম ওষুধ খুঁজতে বেরিয়েছিলাম। তখন কোনও কেমিস্ট ড্রাগিস্ট অর্থাৎ ওষুধ ব্যবসায়ীকে চিনতাম না। ডাক্তার রেমডেসিভির প্রেসক্রাইব করেছিলেন, কিন্তু কোনও দোকানে পাচ্ছিলাম না। তখন ভাবছিলাম যে যদি কাউকে সাহায্য করতে পারি।’
তাঁর কথায়, ‘মহামারীতে সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেরিতে ওষুধ জুটলে মরে যাওয়ারই সম্ভাবনা থাকে সেই রোগীর।’ হাসপাতালে যেখানে তাঁর বন্ধুর কাকিমা ভরতি ছিলেন সেখানেই কয়েকজন ওষুধ ব্যবসায়ীর সঙ্গে আলাপ হয় দীপের। ডাক্তারদের ছাড়াও তাঁরা ব্যক্তিগত ভাবে ওষুধ দিয়ে সাহায্য করতে রাজি ছিলেন। তার পরেই একটি মেসেজ লিখে হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে দেন দীপ। আর এর পর থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে করোনার ওষুধের জন্য ফোন আসতে শুরু করে।
ফোন এসেছে, মুম্বই, গুজরাত ও পশ্চিমবঙ্গ থেকেও। দীপ শাহ প্রতিদিন ওই স্টকিস্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে যাঁদের ওষুধ লাগবে তাঁদের সেটি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। শাহের এমন কাজ হয়তো কারও চোখেই পড়ত না। তবে থানের জৈন অ্যাসোসিয়েশন ভানুশালী সমাজ তাঁকে সম্মান জানিয়েছে। দীপকে ওই সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে।