করোনা ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের জন্য দেশের পাঁচটি জায়গাকে বেছে নিল কেন্দ্র
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা কোভিড-১৯ প্রতিষেধক তৃতীয় এবং চূড়ান্ত ধাপে মানবদেহে প্রয়োগের জন্য দেশের পাঁচটি জায়গাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সোমবার এমটাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের জৈব প্রযুক্তি দফতরের (ডিবিটি) সচিব রেণু স্বরূপ। সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে তিনি জানান, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। দেশবাসীকে প্রতিষেধক দেওয়ার আগে এ বিষয়ে খুব সতর্ক ভাবেই পা ফেলতে হবে। তৃতীয় পর্বের প্রতিষেধক প্রয়োগের জন্য ইতিমধ্যেই ওই পাঁচটি জায়গায় প্রস্তুতি সারা হয়ে গিয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্বরূপ।
ডিবিটি সচিব বলেন, “দেশের প্রতিটি প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছি আমরা। সেরামের তৃতীয় পর্বের এই পরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই প্রয়োগ যদি সফল হয় তা হলে দেশবাসীকে এই প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে।”
করোনার প্রতিষেধক নিয়ে অক্সফোর্ড এবং তার শরিক অ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে কাজ করছে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিষেধক প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। মানবদেহে করোনার প্রতিষেধকের প্রথম দুটো পর্বের প্রয়োগ গত মাসেই হয়ে গিয়েছে। এ বার তৃতীয় পর্ব প্রয়োগের প্রস্তুতি নিচ্ছে সেরাম। সংস্থাটি আগেই জানিয়েছিল, চূড়ান্ত সম্মতি আসার আগে তারা প্রতিষেধক তৈরির কাজ শুরু করে দেবে। প্রতিষেধকের বিষয়ে সব রকম অনুমতি পাওয়ার পরই নির্দিষ্ট পরিমাণের প্রতিষেধক বাজারে ছাড়বে তারা।
মানবদেহে প্রথম পর্বের প্রতিষেধক প্রয়োগের পর গত ২০ জুলাই বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেন, অক্সফোর্ড যে প্রতিষেধক তৈরি করেছে তা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং দেহে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পক্ষেও সক্ষম। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, গত এপ্রিল ও মে-তে ব্রিটেনের পাঁচটি হাসপাতালে ১৮-৫৫ বছয় বয়সি ১ হাজার ৭৭ জন সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রথম পর্বের প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়। দেখা গিয়েছে, প্রতিষেধক দেওয়ার ৫৬ দিন পরে তাঁদের শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।
দ্বিতীয় পর্বে ১০০ জনকে দুটো ভাগে ভাগ করে এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়। শিশু এবং বয়স্কদের দুটো আলাদা দলে ভাগ করেন বিজ্ঞানীরা। এই পর্বের প্রয়োগও সফল হয়। এ বার তৃতীয় ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অক্সফোর্ড। এই পর্বে এক হাজার মানুষের দেহে করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হবে।
সেরাম ছাড়াও দেশের করোনার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছে জাইডাস ক্যাডিলা এবং ভারত বায়োটেক। মানবদেহে প্রতিষেধক প্রয়োগের প্রথম ধাপে রয়েছে তারা।