দেশ বিভাগে ফিরে যান

লকডাউনের জের কাটিয়ে চাঙ্গা অর্থনীতি ঘোষণা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের

July 28, 2020 | 2 min read

পাঁচটি বাণিজ্যিক ক্ষেত্র। পরিকাঠামো, কৃষি ও কৃষি সংক্রান্ত উৎপাদন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র, সাপ্লাই চেইন ও স্টার্ট আপ এবং তথ্য প্রযুক্তি। লকডাউনের জের কাটিয়ে উল্লেখযোগ্য যে অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে, তার নেপথ্যে এই পাঁচটি সেক্টরকে চিহ্নিত করল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। করোনা মহামারী এবং তার মোকাবিলায় লকডাউন। উৎপাদন ক্ষেত্র ধাক্কা খেয়েছে দিনের পর দিন। অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এমন দিকে গড়িয়েছে যে, দেশের জিডিপি আদৌ ইতিবাচক দিশা দেখাতে পারবে কি না, সে নিয়েই সংশয় শুরু হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় আনলক পর্বে প্রবেশ করেছে দেশ। আর তারপরই প্রধানত এই পাঁচটি সেক্টরের হাত ধরে বিপর্যস্ত অর্থনীতির চাকা আবার ঘুরতে শুরু করেছে। সোমবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, পরিকাঠামো, কৃষি ও কৃষি সংক্রান্ত উৎপাদন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্র, সাপ্লাই চেইন ও স্টার্ট আপ এবং তথ্য প্রযুক্তি—এই শিল্পবাণিজ্য ক্ষেত্রগুলি আনলক পর্ব শুরু হওয়ার পরই যথেষ্ট আশা দেখাচ্ছে। এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে আগামী দিনে অর্থনীতি নিয়ে যতটা মন্দার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তার থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির আয়োজনে একটি ভিডিও কনফারেন্সে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর বলেন, ভারতের কৃষি অর্থনীতি বিপুল সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে। গত বছরের থেকেও এবার আরও বেশি পরিমাণ শস্য উৎপাদন হতে চলেছে। অনেক বেশি পরিমাণ চাষের জমিতে এবার ফসল উৎপাদন হওয়ায় গ্রামীণ জীবিকার ক্ষেত্রও অনেকটা বিস্তৃত হয়েছে। মন্দা কাটিয়ে প্রায় বেরিয়েই এসেছে কৃষি উপকরণ উৎপাদন। একইভাবে অপ্রচলিত শক্তি তথা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারত আশাতীতভাবে এগিয়েছে। মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিগুণ বেড়েছে এই সেক্টর। যার ফলশ্রুতি, মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রবণতাও অনেক বেড়ে গিয়েছে। শুধু নির্মাণ শিল্প নয়, পরিকাঠামো ক্ষেত্রেও সবরকম আর্থিক প্যাকেজ ও সহায়তা নিয়ে সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক পুরোপুরি প্রস্তুত। ইতিমধ্যেই নানাবিধ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে পরিকাঠামো নির্মাণে সরকারি ও বেসরকারি লগ্নি আরও বাড়ছে। শক্তিকান্ত দাস বলেন, আরও বেশি করে লগ্নি আসুক। আমেরিকার ভিসা নীতিতে বড়সড় বদল সত্ত্বেও সফ্টওয়্যার এবং তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতকে পরাজিত করা আর সম্ভব নয়। বরং ভারত ক্রমেই আউটসোর্সিংয়ের ভরকেন্দ্র হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত হবে।

এরই পাশাপাশি ব্যাঙ্ক ঋণ পরিশোধের সময়সীমা যাতে নতুন করে আর বাড়ানো না হয়, সেই আর্জি রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে এসেছে। সোমবারই এমন আবেদন জানিয়েছেন বণিকসভার সদস্য তথা ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন শিল্প পরিচালক। লকডাউন শুরু হওয়ার পর প্রথমে তিন মাস এবং তারপর আরও তিন মাস এই ঋণ পরিশোধের কিস্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। ওই বৈঠকে অন্যতম শিল্প পরিচালক এইচডিএফসি চেয়ারম্যান দীপক পারেখ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরকে বলেছেন, আবার কয়েক মাসের জন্য লোনের ইএমআই স্থগিত করা হলে অর্থের জোগান নিয়ে সঙ্কটে পড়বে ব্যাঙ্কগুলি। কারণ, বহু ঋণপ্রাপক আছেন, যাঁদের ঋণ শোধের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা মাসিক কিস্তি দিচ্ছেন না। প্রধানত নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামী মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মানিটারি পলিসি কমিটির বৈঠক হবে। তখন কি আবার রেপো রেট কমবে? আপাতত ওই প্রশ্ন নিয়েই জল্পনা তৈরি হয়েছে। কারণ, মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি হওয়ায় জুন মাসের বৈঠকে কিন্তু রেপো রেট অপরিবর্তিত ছিল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#unlock, #Reserve Bank of India

আরো দেখুন