দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে শর্তসাপেক্ষে কোভিড হাসপাতাল গড়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে শর্তসাপেক্ষে কোভিড হাসপাতাল গড়ার অনুমতি দিল কলকাতা হাই কোর্ট। বালুরঘাটের শুভায়ন হোম ও জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড সংলগ্ন ইয়ুথ হোস্টেলটিকে কোভিড হাসপাতাল (Covid hospital) রূপান্তরিত করার প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকার। কিন্তু, তেমনটা হলে ওই হোমের শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। হোম সুপার, জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের প্রিন্সিপাল ম্যাজিস্ট্রেটের তরফে এমন আশঙ্কার কথা শোনার পরই নবনির্মিত হোস্টেলটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাই কোর্ট।
কিন্তু, রাজ্য সরকারের তরফে হোমের শিশুদের সুরক্ষার ব্যাপারে পুরোপুরি আশ্বাস মেলার পরই শর্তসাপেক্ষে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে আদালত। এপ্রসঙ্গে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, হোমের শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তারপরই শিশু ও নারী কল্যাণ দপ্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসন ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমোদনক্রমে ওই হাসপাতালটি চালু করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সবরকম বিধি যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
বালুরঘাটের যে নবনির্মিত হোস্টেলটিকে কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর করতে চাইছে রাজ্য সরকার ঘটনাক্রমে তার পাশেই রয়েছে শুভায়ন হোম, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ড এবং চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কার্যালয়। এমনকী হোম, বোর্ড, কমিটি কার্যালয় এবং হোস্টেলের একটাই প্রবেশ ও প্রস্থানের পথ। স্বাভাবিকভাবেই তাই হাসপাতাল চালু হলে হোমের শিশুদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানোর বিষয়টি সামনে আসে। জুভেনাইল জাস্টিস কমিটির প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি, জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের প্রিন্সিপাল ম্যাজিস্ট্রেট ও শুভায়ন হোমের সুপারিনটেন্ডেন্ট এ ব্যাপারে আদালতকে তাঁদের আশঙ্কার কথা জানান। মূলত তাঁদের তরফে পাওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই হাসপাতাল তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ডিভিশন বেঞ্চ।
কিন্তু, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে আশ্বস্ত করেছেন, হোমের শিশুদের সুরক্ষার বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত করার পরই হাসপাতাল চালু করা হবে। এব্যাপারে রাজ্য সরকার দায়বদ্ধ। হোস্টেলটি কোভিড হাসপাতাল হিসেবে চালু হলে সেখানে রোগীদের নিয়ে আসার জন্য একটি পৃথক পথও চিহ্নিত করা হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট জেনারেল। শুনানিতে উপস্থিত শিশু ও নারী কল্যাণ দপ্তরের সচিব জানান, হোমের শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরই হাসপাতালটি চালু করা যেতে পারে।
সচিবের এই বক্তব্য শোনার পর আদালত শর্তসাপেক্ষে হাসপাতাল তৈরির অনুমতি দিয়ে বলে, শিশু ও নারীকল্যাণ দপ্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে। উভয়পক্ষ একমত হলেই স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমোদনক্রমে হাসপাতালটি চালু করা যাবে।