বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

কোচবিহারের রাজকন্যা থেকে রাজপুতানার রানী – অনন্যা গায়ত্রী দেবী 

July 29, 2020 | 2 min read

কোচবিহার রাজবংশে জন্ম গায়ত্রী দেবীর। তাঁর বাবা জিতেন্দ্র নারায়ণ ছিলেন কোচবিহারের মহারাজা। মা, ইন্দিরা রাজে ছিলেন ভডোদরার মরাঠা রাজকুমারি। তাঁর ঠাকুরদা ছিলেন মহারাজ নৃপেন্দ্রনারায়ণ ভূপ বাহাদুর। ঠাকুমা, কোচবিহারের মহারানি সুনীতিদেবী ছিলেন ব্রাহ্মনেতা কেশবচন্দ্র সেনের মেয়ে। 

অল্প বয়সেই পোলো খেলায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন গায়ত্রী দেবী। পোলো খেলতেই মাত্র ১২ বছর বয়সে এসেছিলেন কলকাতায়। তখনই আলাপ জয়পুরের তৎকালীন রাজা দ্বিতীয় সোয়াই মান সিংহের সঙ্গে। পরে, তাঁকেই বিয়ে করেন গায়ত্রী দেবী। 

গায়ত্রী দেবীর দিদিমা এবং মা দুজনেই ছিলেন সময়ের তুলনায় অনেকটা এগিয়ে। তাঁদের থেকে সেই ধারা পেয়েছিলেন গায়ত্রী দেবী নিজেও। বাবা মায়ের অমত সত্ত্বেও বিয়ে করেছিলেন রাজা দ্বিতীয় সোয়াই মান সিংহকে।  

দ্বিতীয় সোয়াই মান সিংহের অন্য পক্ষের দুই রানি ছিলেন যোধপুরের রাজকন্যা। তবে তাঁর বেশি ঘনিষ্ঠ ছিলেন গায়ত্রী দেবীই। তিনিই হয়ে ওঠেন জয়পুরে রাজমাতা। ১৯৪৯ সালে জন্ম নেন তাঁর একমাত্র সন্তান, জগৎ সিংহ। 

তবে রাজপরিবারে পর্দাপ্রথা কোনদিনই মানেননি এই বঙ্গ ললনা। অন্য দুই রানি পর্দানসীন থাকলেও গায়ত্রীদেবী জীবন কাটিয়েছিলেন নিজের মতোই। তাঁকে কোনও বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে বেঁধে ফেলা যায়নি।

স্বাধীন ভারতে রাজনীতির অন্যতম মুখ হয়ে ওঠেন গায়ত্রী দেবী। শান্তিনিকেতনে ছাত্রীজীবন থেকে ইন্দিরা গাঁধীর সঙ্গে তাঁর যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা শুরু হয়েছিল, তা বজায় ছিল পরবর্তী কালেও রাজনীতির ময়দানেও। 

গায়ত্রী দেবী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন ১৯৬২ সালের লোকসভা নির্বাচনে। জয়ী হয়েছিলেন রেকর্ড ব্যবধানে। ১৯৬৭ এবং ১৯৭১-এর লোকসভা নির্বাচনেও তিনি কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে জয় ধরে রাখতে পেরেছিলেন।

সাতের দশকে জরুরি অবস্থার সময়ে আয়কর আইন অবমাননার দায়ে তাঁকে কারাদণ্ড ভোগ করতে হয়। পাঁচ মাস তিনি কাটিয়েছিলেন তিহাড় জেলে। এরপর ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দান থেকে সরে আসেন তিনি।

স্বাধীন ভারতে রাজতন্ত্র বিলুপ্ত হওয়ার পরেও তিনিই ছিলেন জয়পুরের ‘রাজমাতা’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#queen of rajputana, #gayatri debi, #Coochbehar

আরো দেখুন