খেলা বিভাগে ফিরে যান

২৯শে জুলাই, ১৯১১ – যেদিন আবেগে ভেসেছিল গোটা দেশ

July 29, 2020 | 2 min read

২৯শে জুলাই, ১৯১১। ব্রিটিশদের অহমিকাকে চূর্ণ করে আইএফএ শিল্ড জেতে মোহনবাগান। তারাই প্রথম ভারতীয় দল যারা এই সম্মান অর্জন করে।  খালি পেয়ে ইংরেজদের মত শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেন ১১ জন বাঙালি।

উত্তর কলকাতার ফড়িয়াপুকুরে তিন অভিজাত মিত্র, সেন ও বসু পরিবার প্রতিষ্ঠা করেন মোহনবাগান ক্লাবটি। কিরিটী মিত্রের বাড়ি মোহনবাগান ভিলায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে ক্লাবটির নাম রাখা হয় ‘মোহনবাগান স্পোর্টস ক্লাব’, পরবর্তী কালে যার নাম হয় ‘মোহনবাগান অ্যাথলেটিক ক্লাব’।

১৯০৪ সালে সেই কোচবিহার কাপ জয়ের মাধ্যমে তাদের জয় যাত্রা শুরু হয় । তারপর এলো ১৯১১ সালের জুলাই মাস। বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন চলছে। সদ্য ফাঁসি হয়েছে ক্ষুদিরাম বসুর। উত্তাল বাংলার রাজনীতি। ইংরেজরা অন্যায় ভাবে যখন প্রতিবাদের সকল ভাষাকে দমাতে শুরু করল, ঠিক তখনই আশার একমাত্র আলো দেখালো ‘মোহনবাগান আর বাঙালির ফুটবল’।    

ভারতবর্ষের সম্মানজনক ফুটবল টুর্নামেন্ট আই.এফ.এ শিল্ডে মোহনবাগান অংশগ্রহণ করল। সেমিফাইনালে হারালো ইংরেজ ক্লাব মিডলসেক্সকে। ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা মুখোমুখি হল ইংরেজ ক্লাব ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের।

অবশেষে এলো ২৯ শে জুলাই। ফাইনাল ম্যাচ। ইডেন গার্ডেনে ৮০ হাজার মানুষের ঢল।  সমর্থকদের ভিড় সামলাতে সরকারকে সেদিন চালু করতে হয়েছিল অতিরিক্ত ফেরি ও রেল পরিষেবা। ঢাকা, বরিশাল বা চট্টগ্রাম থেকেই নয়, আসাম, বিহার, উত্তর প্রদেশ থেকেও এলেন বহু মানুষ, এই মহাযুদ্ধকে চাক্ষুস করতে। খেলোয়াড়েরা নামলেন খালি পায়ে। সবাই অবাক! 

এদিকে ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের দীর্ঘদেহী ইংরেজ ফুটবলাররা ক্রীড়াসজ্জায় সুসজ্জিত। শোনা যায়, শুধুমাত্র বুট পরতে রাজি না হওয়ায় ১৯৫০ এর ফুটবল বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়েও খেলতে পারেনি ভারত।

খেলার প্রথমার্ধে এক গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে গেল মোহনবাগান। বিরতির পরই অধিনায়ক শিবদাস ভাদুড়ির গোলে ভারসাম্য আসে ম্যাচে। ম্যাচ শেষের অল্প কিছুক্ষণ আগে অভিলাষ ঘোষের গোলে জয় পায় মোহনবাগান।  উল্লাসে ফেটে পড়ে জনতা। না! সেদিন কেউ “মোহনবাগান,হিপ-হিপ -হুররে” এই ধ্বনি তোলেনি , বরং সবার মুখে মুখে ফিরতে থাকে “বন্দে মাতরম”। যেন ইংরেজদের বিরূদ্ধে ভারতীয়দের প্রথম যুদ্ধ জয়। আবেগের জোয়ারে সেদিন ভেসেছিল বাংলা তথা গোটা দেশ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Mohun Bagan A.C.

আরো দেখুন