তেহেলকা দুর্নীতি! চার বছরের কারাদণ্ড জয়া জেটলির
২০০১ সাল। তুমুল আলোড়ন ফেলে ফাঁস হয়েছিল রাজনীতিকদের ঘুষ নেওয়ার ফুটেজ। তখনও ‘স্টিং অপারেশন’ পরিচিত শব্দের ঝুড়িতে তেমন জায়গা করে নিতে পারেনি। কিন্তু ভারতীয় রাজনীতির এক অন্যতম কালো অধ্যায় বেনকাব করেছিল এমনই এক অপারেশন। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এক বড়সড় দুর্নীতির প্রমাণ ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ‘নারদ’ খ্যাত ম্যাথু স্যামুয়েল। সেই প্রতিরক্ষা দুর্নীতি মামলায় বৃহস্পতিবার সমতা পার্টির প্রাক্তন প্রধান জয়া জেটলিকে চার বছরের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে সমতা পার্টির আরও এক নেতা গোপাল পাচেরওয়াল ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল এসপি মুরগাইকেও চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এদিন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম (thermal imagers) কেনায় দুর্নীতি ও অপরাধিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জর্জ জর্জ ফার্নান্ডেজের ঘনিষ্ট জয়া জেটলি-সহ তিন অভিযুক্তকেই দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। সাজার পাশাপাশি তাদের ১ লক্ষ টাকা জরিমানা জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। ভারচুয়াল শুনানিতে দোষীদের আজই আত্মসমর্পণ করা আদেশ দিয়েছেন বিচারক বীরেন্দ্র ভাট। উল্লেখ্য, প্রায় দু’দশক আগে তেহেলকা ডট কম নিউজ পোর্টালের তরফে করা হয়েছিল ‘অপারেশন ওয়েস্টেন্ড।’ ২০০১ সালের জানুয়ারি মাসে গোপন ক্যামেরা নিয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের অন্দরমহলে পৌঁছে গিয়েছিলেন সাংবাদিক ম্যাথু স্যামুয়েল। সেই ফুটেজেই জয়া জেটলিকে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। মেজর জেনারেল মুরগাইকে দেখা গিয়েছিল ২০ হাজার টাকা নিতে। চুক্তি ছিল টাকার বিনিময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রক যে thermal imagers কিনবে তার বরাত যিনি টাকা দিচ্ছেন তাঁর কোম্পানিকে দিতে হবে। পুরোটাই ছিল সাজানো। দুর্নীতি ধরার ফাঁদ।
উল্লেখ্য, নেহেরু আমলের জিপ কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে প্রথম এনডিএ সরকারের আমলে কফিন দুর্নীতি। ভারতের ইতিহাসে আর্থিক দুর্নীতির অন্যতম বড় জায়গা হচ্ছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র। অগস্টা ওয়েস্টল্যান্ড চোপার কেলেঙ্কারিতে সোনিয়া গান্ধীর নাম জড়ানোও নতুন কিছু নয়। তবে কোনও দুর্নীতি মামলার সুরাহা হয়ে সাজা ঘোষণার ঘটনা এদেশে বড় একটা চোখে পড়ে না। জয়া জেটলির ক্ষেত্রে আদালতের রায় তাই এদেশের রাজনীতিতে একটা বড়সড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত হয়ে থাকবে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।