বিনোদন বিভাগে ফিরে যান

শকুন্তলা দেবী – বিদ্যা বালানের অভিনয় ধরে রাখে দর্শকের মন

July 31, 2020 | 2 min read

শকুন্তলা দেবী। ছোটবেলায় সাধারণ জ্ঞানের ক্লাসে এই নামটা সকলেই শুনেছি। মানব কম্পিউটার নামেই প্রসিদ্ধ তিনি। বিশ্বের তাবড় তাবড় গণিতজ্ঞকে নাকানি চোবানি খাইয়েছেন তিনি। কম্পিউটারের চেয়েও তাড়াতাড়ি জটিল অঙ্কের সমাধান করে তাক লাগিয়েছেন। শকুন্তলা দেবী সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের পরিধি এইটুকুই। ব্যক্তি শকুন্তলাকে কেউ চিনিনা আমরা।

অনু মেনন পরিচালিত শকুন্তলা দেবী ছবিতে আমরা পরিচিত হই মানব কম্পিউটারের পেছনের মানুষটার সাথে। বিদ্যা বালানের অসাধারণ অভিনয় এবং পরিণত চিত্রনাট্যের ঠাসবুনোটের সৌজন্যে ঢুকে পড়ি শকুন্তলার বিশ্বে। নম্বর, সম্পর্ক, জেদ, উচ্চাকাঙ্খা, মাতৃত্ব – নানা অনুভূতির মহামিলনে সমাহিত হই ইতিহাসের পাতায়। শকুন্তলা দেবীর জীবনের সময়ের গল্প বলতে গিয়ে শুরুতেই সাবধান করেছেন পরিচালক – এই কাহিনী সত্য ঘটনা অবলম্বনে হলেও দেখানো হয়েছে শকুন্তলা দেবীর কন্যা অনুপমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।

বিদ্যা বালান পর্দায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ফুটিয়ে তুলেছেন বিখ্যাত চরিত্রকে। একজন গণিত জিনিয়াসই নন শকুন্তলা দেবী বাস্তব জীবনেও একজন স্বাধীনচেতা, দৃঢ় মানসিকতা সম্পন্ন ছিলেন। শৈশবেই তাঁর প্রতিভা টের পেয়ে বাবার হাত ধরে একের পর এক শো-এ হাজির হতেন তিনি। সেই কারণে স্বাভাবিক শৈশব উপভোগ করতে পারেননি। তবে ঠিক করে নিয়েছিলেন, জীবনে বড় কিছু করে দেখাবেন তিনি। পুরুষতান্ত্রিক এই সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবেন এক ‘বড় মহিলা’ হিসেবে।

অঙ্ক তার প্রথম প্রেম। কিন্তু নিজের মেয়েকেও ভালোবাসতেন অঢেল। ‘সাধারণ’ হতে তিনি কোনওদিন চাননি। তাই নিজের মেয়েকেও দিতে পারেননি সাধারণ শৈশব। চিড় ধরে তাদের সম্পর্কে। নিজের মায়ের প্রতি ক্ষোভ আর নিজের প্রতি মেয়ের অভিমান – দুইয়ের মধ্যে পিষে যান ললাটের লিখনে। সংসারের মোহবন্ধনেও আবদ্ধ থাকেননি শকুন্তলা – যদিও স্বামীর সমকামিতার বিষয়টি এই ছবিতে সকৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে।

এই ছবি জুড়ে রয়েছেন শুধু বিদ্যা। জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়ে শকুন্তলার সংগ্রাম সাবলীলভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিনি। কখনও মা, কখনও অঙ্কপ্রেমী, কখনও লাস্যময়ী আবার কখনও উচ্চাকাঙ্খী নারী – একই ছবিতে নানা রূপে ধরা দেন বিদ্যা। শকুন্তলা দেবীর কন্যা হিসাবে সানিয়া মালহোত্রা, স্বামী হিসাবে যীশু সেনগুপ্ত, এবং অমিত সাধও নিজেদের চরিত্র ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

ছবির গোড়ার দিকে একটি সংলাপে বিদ্যা বলেন, “আমরা ভারতীয়। আমরা অতিনাটকীয়তাই পছন্দ করি।” ছবির চিত্রনাট্য (অনু মেনন এবং নয়নিকা মাহতানি) এবং সংলাপেও (ঈশিতা মৈত্র) সেই ছাপ স্পষ্ট। অন্তরা লাহিড়ীর ‘নন-লিনিয়ার’ সম্পাদনায় ছবিটি আরও কম্প্যাক্ট হয়েছে।

সব পাওয়ার মধ্যেও একটা না পাওয়ার ভাব যেন তাও থেকে যায়। মনে একটা অতৃপ্তি রয়ে যায় দু’ঘন্টা পর। অতিমানব এক মানুষের জীবনের গল্প তো দেখলাম – কিন্তু মনে গেঁথে যাওয়ার মত হল কি? নাকি অঙ্ক শুধু মিলে গেল ফর্মুলার জোরে? সেটা দর্শকরাই বিচার করবেন।

রেটিং: ৩/৫ স্টার

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Vidya Balan, #Shakuntala Devi

আরো দেখুন