১০০ দিনের কাজের হিসেব নিতে রাজ্যে আসছে কেন্দ্রীয় দল
একশো দিনের কাজের ‘অডিট’ করতে দিল্লি থেকে রাজ্যে আসছে বিশেষ কেন্দ্রীয় দল। রাজ্য প্রশাসন সূত্রে এই খবর জানিয়ে বলা হয়েছে, আগামী ১০ অগস্ট এমনই একটি দলের জলপাইগুড়ি যাওয়ার কথা। সেখানে টানা চার দিন ধরে গত পাঁচটি আর্থিক বছরের একশো দিনের প্রকল্পের হিসেব পরীক্ষা করার কথা তাদের। এর আগে করোনা এবং আমপান পরবর্তী পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় দল রাজ্যে এসেছিল। রাজ্যের শাসকদলের একটি অংশের দাবি, ২০২১ সালের ভোটের আগে এই ভাবে আবার চাপের কৌশল নিয়েছে দিল্লি।
রাজ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধু জলপাইগুড়ি নয়, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, দুই ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদের মতো আরও বেশ কয়েকটি জেলায় এমন দল আসতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। একশো দিনের কাজের পর্যালোচনা করতে একটি ‘সোশ্যাল অডিট টিম’ প্রায় প্রতি বছরই আসে। তাতে রাজ্যের প্রতিনিধিরাও থাকেন। কিন্তু এ ভাবে কেন্দ্রের বিশেষ অডিট দল আসার ঘটনা বেনজির।
কী দেখবে এই দলটি? প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬-১৭ থেকে চলতি আর্থিক বছর পর্যন্ত সব নথি ঠিক রাখতে বলা হয়েছে। প্রকল্পের কাজের সব রসিদ, ক্যাশবুক তৈরি
রাখতে বলা হয়েছে জলপাইগুড়ির প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকে। প্রকল্পের যাবতীয় খুঁটিনাটি সাতটি রেজিস্ট্রারে লেখা হয়। প্রতিটি রেজিস্ট্রারকে যথাযথ ভাবে পূরণ করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পঞ্চায়েতগুলিকে। যে প্রকল্পের কাজগুলি চলছে সেখানে যাতে কাজের নাম, বরাদ্দ, কাজের বিবরণ-সহ বোর্ড টাঙানো থাকে, তা-ও সুনিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। পরিদর্শনের দিনগুলিতে সব কর্মীকে অফিসে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের কথায়, “অডিট দল এলে কোন গ্রাম পঞ্চায়েতের কোন এলাকায় যাবে, জানা সম্ভব নয়। তাই সর্বত্রই যথাযথ পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
রাজ্য প্রশাসনের একটি সূত্রে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে জুলাইয়ের মধ্যে যা কাজ হয়, এ বারে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় তার থেকে দেড়, দুই বা তিন গুণ কাজ হয়েছে বলে জানতে পেরেছে দিল্লি। এই দলটি দেখতে চাইছে, আদৌ এত কাজ হয়েছে কি না। রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দল এলে আসুক। দেখেও যাক। আমরা যা করেছি, সব আইন মেনে। আইনে বলা আছে, কাজ চাইলে কাজ দিতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে কাজ দিতে না পারলে তার জন্য আলাদা ভাতা দিতে হবে। এই সময়ে কয়েক লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যে ফিরেছেন। তাঁরাও কাজ চাইছেন। তাই কাজ তো বেশি হবেই।’’ যদিও রাজ্য প্রশাসনেরই একটি সূত্রের দাবি, অনেকে ফিরে এলেও একশো দিনের কাজে এখনও পরিযায়ীদের যোগ দেওয়ার পরিমাণ বেশি নয়।