রাজরোষে কিশোর কুমারও নিষিদ্ধ হয়েছেন এদেশে
ভারতীয় সঙ্গীতের ইতিহাসে সম্ভবত কিশোর কুমারই একমাত্র গায়ক যিনি সব রকমের মুডের গান, সমান দক্ষতার সাথে গেয়েছেন। বেশ কয়েক দশক উনি শ্রোতাদের মনে বিরাজ করেছেন, আজও করছেন। কিন্তু জানেন কি সাত-এর দশকে একবার ভারত সরকার এই জনপ্রিয় গায়কের গানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল!
১৯৭৬ সালে দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। সেই সময় ভারত সরকারের একজন প্রজ্ঞাপক বিদ্যা চরণ শুক্লা কিশোর কুমারের কাছে একটা প্রস্তাব নিয়ে যান। ঠিক হয়েছিল বলিউডের সব থেকে জনপ্রিয় দশজন সেলিব্রিটিদের সাহায্য নিয়ে সরকারি নীতির প্রচার করা হবে অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শনে। কিন্তু কিশোর কুমার এই ব্যাপারে সাহায্য করতে অস্বীকার করেন ।
কিশোর কুমারকে আরও একবার বোঝাতে তথ্য ও সম্প্রাচার এর যুগ্ন সচিব সিবি জৈন গায়ককে ফোন করেন। উনি সবিস্তারে কিশোরকে জানান সরকার ওঁর কাছ থেকে কী চাইছে। সিবি জৈন কিশোর কুমারের সঙ্গে দেখাও করতে চান। কিন্তু তাঁকেও ফিরিয়ে দেন কিশোর কুমার। উনি জানিয়ে দেন শরীর খারাপ তাই ডাক্তার গান গাইতে বারণ করেছেন এবং ঘরে রেস্ট নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এতে বিক্ষুব্ধ সিবি জৈন গায়কের নামে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এস এম এইচ বার্নের কাছে অভিযোগ জানান। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়ে একটা অর্ডার পাস করেন। তাঁরা অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শন থেকে কিশোর কুমারের গান ব্যান করে দেন।
অনতিবিলম্বে কিশোর কুমার একটা চিঠি লিখে সরকারি কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেন উনি সব রকমভাবে সরকারকে সাহায্য করতে প্রস্তুত আছেন। ফলে ওঁর গানের ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়।