করোনার থাবা, আক্রান্ত বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস ও তাঁর স্বামী
করোনা সংক্রমিত গাজোল বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস এবং তাঁর স্বামী। এছাড়াও আরও ১৬ জন সংক্রমিতের হদিশ পাওয়া গেছে। তবে বিধায়ক করোনা সংক্রমিতের তালিকায় চলে আসায় স্বাভাবিকভাবেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা গাজোল ব্লক জুড়ে।
তৃণমূলের নেতা কর্মী ছাড়াও ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশ প্রশাসনের মধ্যেও একটা চাপা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। কারণ, গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়া এবং যুব কল্যাণ বিভাগ আয়োজিত রাখীবন্ধন উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক এবং তৃণমূলের নেতা কর্মী সহ প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা। ওই অনুষ্ঠানের পরই হাতিমারি হাসপাতালে তিনি পরীক্ষার জন্য লালা নমুনা দিয়ে আসেন। সেই লালা নমুনার রিপোর্টে মঙ্গলবার রাতে ১৮ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
এদিন বিধায়ক এবং তাঁর স্বামীর করোনা সংক্রমনের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা গাজোলে। উল্লেখ্য, গত ২৮ জুলাই করোনা উপসর্গ নিয়ে বিধায়কের বাড়ির এলাকার এক ব্যবসায়ী মারা যান। যদিও তাঁর লালা নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। কিন্তু পরে দেখা যায় ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির তিনজন সংক্রমিত হয়েছেন। সংক্রমিত হয়েছেন তাঁর দোকানের এক কর্মীও। এছাড়া এদিন নয়াপাড়ার একজন এবং সংলগ্ন শালবোনার একজন সংক্রমিত হয়েছেন। ব্যবসায়ী মৃত্যুর পর ওই এলাকাকে কনটেনমেন্ট জোন হিসেবে ঘোষণা করে গাজোল থানার পুলিশ। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকটি দলীয় কর্মসূচি এবং সরকারি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন বিধায়ক। যার মধ্যে অন্যতম ছিল রাখি বন্ধন উৎসব। এই উৎসবে তৃণমূলের নেতা কর্মী, সাধারণ মানুষ সহ পঞ্চায়েত সমিতি এবং প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। বিধায়ক নিজেও বেশ কয়েকজনের হাতে রাখি বেঁধে দেন। অনুষ্ঠানের পরই তিনি হাতিমারি হাসপাতালে লালার নমুনা দিয়ে আসেন। এরপর বিধায়ক সংক্রমিত হতেই স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মেডিকেল টিম এসে তাঁদের পর্যবেক্ষণ করে গেছেন। তবে কোনও উপসর্গ না থাকায় আপাতত হোম কোয়ারান্টিনে থাকবেন তাঁরা।
বিধায়ক এবং তাঁর স্বামী ছাড়াও আরও ১৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। এদিন ১৮ জনের মধ্যে ৯ জন গাজোল শহর এলাকার এবং ৯ জন গ্রামীণ এলাকার। আদর্শপল্লীর দুইজন, নয়াপাড়ার তিনজন, রাঙাভিটার তিনজন, শিক্ষকপল্লীর একজন, আলমপুরের একজন, বৈরগাছির একজন, ফতেপুরের একজন, হাতিমারির দুইজন, ইমামনগরের দুইজন, শালবোনার একজন, এবং কালিতলার একজন সংক্রমিত হয়েছেন।
স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, মঙ্গলবার গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে ৬৯ জনের লালা নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট বুধবার বা বৃহস্পতিবারের মধ্যেই চলে আসবে। তবে, বুধবার যারা নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন তাদের মধ্যে থেকে দুইজনকে গাজোল কলেজের সেফ হাউসে নিয়ে আসা হয়েছে। বাকিদের বাড়িতেই হোম কোয়ারান্টিনে থাকতে বলা হয়েছে। বর্তমানে গাজোল কলেজের সেফ হাউসে জেলার বিভিন্ন এলাকার ১৪ জন রয়েছেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে প্রত্যেক সোম, বুধ এবং শুক্রবার হাতিমারি হাসপাতালে লালা নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। গাজোল গ্রামীণ হাসপাতালে লালা নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে মঙ্গল ,বৃহস্পতি এবং শনিবার।