কষা মাংস হোক বা পাটিসাপটা, বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে উদ্যোগী পঞ্চায়েত দপ্তর
সকালবেলা যদি খাটুনি ছাড়াই গরম হিংয়ের কচুরি, আর কলো জিরে দিয়ে গা-মাখা আলু চচ্চড়ি খাবার টেবিলে হাজির হয়? অথবা খান দু’য়েক রুটির সঙ্গে পাঁঠার মাংসের কিমা দিয়ে ঝাল ঝাল ঘুগনি? দুপুরবেলা যাঁরা একটু আয়েশ করে ভাত-পাতে বসতে চান, তাঁদের জন্য খাসির মাংসের সোনালি ঝোল অথবা লাল টুকটুকে চিকেন কষার বাটি এলে? নিত্যদিনের হোম ডেলিভারির চল অনেক বাড়িতেই। কিন্তু অঢেল মুখরোচক মেনু সাজিয়ে চারবেলা জোগান দেওয়ার মতো হিম্মত নেই অনেক সংস্থার। সেই কঠিন কাজটাই শুরু করেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। মূলত সল্টলেক ও নিউটাউনের বিস্তীর্ণ এলাকায় এই পরিষেবা চালু হয়েছে। পাশাপাশি এখন শহরের যে কোনও প্রান্তে খাবার পৌঁছে দেওয়ার গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন দপ্তরের অধীনে থাকা সংস্থার কিছু উদ্যমী কর্মী।
পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনস্থ ওয়েস্ট বেঙ্গল কমপ্রিহেন্সিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের হাত ধরে শুরু হয়েছে এই হোম ডেলিভারি। গ্রামে গ্রামে হাজার হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা এই সংস্থার হাত ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। সে জৈব চাষই হোক, বা অন্যান্য শিল্পে হরেক পণ্য উৎপাদন। উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করার কাজটিও করছে এই সংস্থা। কাউন্টার খুলে বা ঠান্ডা গাড়িতে করে এলাকায় এলাকায় বিক্রি হচ্ছে হরেক পণ্য। মশলাপাতি বা মুদিখানার মাল, আনাজ থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ডিম—কী নেই সেই তালিকায়! কর্পোরেশনের প্রশাসনিক অধিকর্তা সৌম্যজিৎ দাসের কথায়, বহু মানুষ নানা কারণে বাড়ির বাইরে বেরতে পারেন না। অথচ তাঁরা টাটকা ও উন্নত গুণমানের পণ্যের খোঁজ করেন। তাঁদের জন্য দপ্তর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। তাঁদের অর্ডারে বাড়িতে পৌঁছে যায় আমাদের পণ্য। এরই মধ্যে এক কোটির দিকে যাচ্ছে বিক্রিবাটা।
এ তো গেল ভ্রাম্যমাণ বাজারের কথা। কিন্তু জিভে জল আনা খাবার সাজিয়ে হোম ডেলিভারি? দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, সল্টলেকে দপ্তরের নিজস্ব অফিসে ক্যান্টিন তো ছিলই। সেই পরিকাঠামোকে কাজে লাগিয়ে বাড়ির দোরগোড়ায় পৌঁছে যাচ্ছে খাবার। মাধ্যম, সেই হোয়াটসঅ্যাপ। দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ডেলিভারি চার্জ কিছু নেই। শুধু ন্যূনতম নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকার অর্ডার দিলেই চলবে। তারপর সুস্বাদু খাবারের জন্য অপেক্ষা!