লকডাউন নিয়েও সংকীর্ণ রাজনীতি বিজেপির
লকডাউন নিয়েও সংকীর্ণ রাজনীতি| এই ভয়াবহ মহামারীর মধ্যেও সাম্প্রদায়িক ,বিভেদমূলক রাজনীতি করতে ছাড়ছে না বিজেপি| আগস্ট মাসের প্রতি সপ্তাহে দুদিন করে লকডাউনের ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই বিজেপি যেন ঝাঁপিয়ে পড়েছ্| তারা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, কেন লকডাউন থেকে ঈদের দিনকে ছাড় দেওয়া হল| রীতিমতো যেন জবাবদীহি চাইছেন| কিন্তু যে প্রসঙ্গটা তাঁরা সযত্নে এড়িয়ে যাচ্ছেন, তা হল বেশ কিছু পবিত্র হিন্দু উৎসবকেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। রাখী পূর্ণিমা, জন্মাষ্টমী, মনসা পুজো ও গণ্শ চতুর্থীর দিনেও তো লকডাউন ফেলা হয়নি|
লর্ড কার্জন যখন বাংলাভাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, রবীন্দ্রনাথ তখন রাখীবন্ধনের মধ্যে দিয়ে একতা ও মৈত্রীর বার্তা দিয়েছিলেন| এই করোনাকালে আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ঘৃণা ও বিভাজনের রাজনীতিকে পরিত্যাগ করার শপথ নিতে হবে, বাংলা তোমার বাংলা আমার, বাংলা সকলের, তাই তো এটা সোনার বাংলা|
এতো গেল একটা দিক| চিকিৎসা বিজ্ঞীনের দিক থেকেও লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা জায়গায় নানা কথা লেখা হচ্ছে| এ নিয়ে সংশয়ের কোনও অবকাশ নেই, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী, যিনি স্বাস্থয মন্ত্রীও বটে| স্বাস্থ্য় সংক্রীন্ত যে কোনও সিদ্ধান্তে একমাত্র বিজ্ঞানকেই প্রাধান্য দেন| তিনি মনে করেন রাজনৈতিক নেতা বা আমলা নয়, কোনও গুরুতর স্বাস্থ্য সঙ্কটে সঠিক পরামর্শ দিতে পারেন কেবল বিশেষজ্ঞরাই| এমন মনে করার কোনও কারণ নেই যে, শুধুমাত্র হাওয়ার উপরে নির্ভর করেই সপ্তাহে দু দিন লকডাউন ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া হল|
এই সিদ্ধান্ত বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইন্স্টিটিউট অফ সায়েন্সের অধ্যাপকদের তৈরী গাণিতিক অনুমানের মডেলের ভিত্তিতে নেওয়া| সেই সমীক্ষা অনুযায়ী কঠোর লকডাউন চাপানো না হলে সামনের অক্টোবর মাসে বাংলায় দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে এক লক্ষে| আর সপ্তাহে দুদিন লকডাউন মেনে চললে সেই সংখ্যাই ২০ হাজারে নেমে আসবে| কেউ যখন আহ্বান জানাচ্ছে হাততালি বাজাও, থালি বাজাও, দিয়া জ্বালাও (আপনার নিজের ইচ্ছে করলে অবশ্য করতেই পারেন), বাংলা কিন্তু বিশুদ্ধ বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করেই সক্রিয় হওয়ায় বিশ্বাসী|