ওয়েবসাইট থেকে মুছে দিল লাদাখে চীনা অনুপ্রবেশের রিপোর্ট, বিতর্কের মুখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক
চীন তাহলে সত্যিই লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে ভারতের সীমানায় প্রবেশ করেছিল? খোদ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি রিপোর্টে এই তথ্য প্রকাশ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এই চাঞ্চল্যের অন্যতম কারণ হল, মঙ্গলবার ভারতের সামরিক বাহিনীর ওয়েবসাইটে এই তথ্য সংক্রান্ত বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ সেই তথ্য নিয়ে মিডিয়া ও রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়। আর তারপরই বৃহস্পতিবার ওই রিপোর্ট সরিয়ে নেওয় হয়েছে ওয়েবসাইট থেকে। তাতে বিতর্কও বেড়েছে বহুগুণ। সুযোগ পেয়ে আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। বলেছেন, তথ্য গোপন করে কিংবা রিপোর্ট উধাও করে দিলে কী হবে? যা সত্যি, সেটা সত্যিই থাকবে। চীন যে লাদাখের সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের জমিতে প্রবেশ করেছিল, এটা সর্বজনবিদিত। প্রধানমন্ত্রী যতই অস্বীকার করুন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চীনের আগ্রাসন’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট আপলোড করা হয়েছিল। তাতে বলা হয়, ৫ মে থেকে গলওয়ান উপত্যকায় চীনের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। বিশেষ করে কুংরাং নালা, গোগরা, এবং প্যাংগং লেক অঞ্চলে এই অনুপ্রবেশ ঘটেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দুই দেশের সেনার মধ্যে সীমান্তেই ফ্ল্যাগ মিটিং হয়েছিল ৬ জুন। কিন্তু ১৫ জুন দু’পক্ষের মধ্যে মারাত্মক একটি সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তারপর কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছে।
তবে চীনের আগ্রাসী মনোভাবের জন্য সেনা সরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদী হতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক ঘটনাবলির বিবরণ দিয়ে এরকম রিপোর্ট সাধারণত প্রতি মাসেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়। এবারও সেরকমই করা হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট নিয়ে হইচই শুরু হয়ে যায়। কারণ, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজেই লাদাখে গিয়ে বলেছিলেন, কোনও অনুপ্রবেশ ঘটেনি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লাগাতার এই ইস্যুতে সরব হয়ে প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করেছেন। বস্তুত সরকার লাগাতার বলে এসেছে, ভারতের মাটিতে চীন পা রাখেনি। তাই পাল্টা বিরোধীরা প্রশ্ন করছে, তাহলে এই যে দু’মাস ধরে দফায় দফায় চীনের সঙ্গে সীমান্ত বৈঠক হচ্ছে, তার কারণ কী? সরকারি বক্তব্য, সীমান্ত ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থায়ী ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা কায়েম রাখার জন্যই এই বৈঠক।