সংক্রমণের আতঙ্ক! করোনা হাসপাতালে যেতে নারাজ চিকিৎসকরা
রাজ্য সরকারের তৈরি করে দেওয়া চিকিৎসক দলের সদস্যরা কোভিড হাসপাতালে যেতে নারাজ। সম্প্রতি সরকারের তরফে কোভিড হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসার জন্য ছজনের একটি দল তৈরি করে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বুধবার সেই চিকিৎসক দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। সেই বৈঠকে নিজেদের শারীরিক সমস্যার কথা তুলে ধরে কোভিড হাসপাতালে যাবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
তবে হোম আইসোলেশন বা সেফ হাউসে থাকা রোগীদের ফোনকল বা ভিডিও কলের মাধ্যমে তাঁরা সাহায্য করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা। যদিও এ বিষয়ে চিকিৎসকরা সংবাদমাধ্যমে কিছু জানাতে চাননি। এদিন চিকিৎসক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে উত্তরবঙ্গের করোনা মোকাবিলায় অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায় বলেন, কিছুদিন আগে স্বাস্থ্যভবন থেকে আমাদের কাছে পাঠানো এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, ছজন চিকিৎসক কোভিড হাসপাতালের ওয়ার্ডে গিয়ে দুবেলা প্রত্যেক রোগীকে দেখবেন। সেইসঙ্গে তাঁদের পরামর্শের রেকর্ড রাখতে হবে এবং স্বাস্থ্যভবনে পাঠাতে হবে। এ বিষয়ে আলোচনা করতে ওই ছয় চিকিৎসককে এদিন ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা প্রত্যেকেই জানিয়ে দেন, শারীরিক সমস্যার কারণে এই কাজ করা সম্ভব নয়। সুশান্তবাবু বলেন, আমরা বলেছি তাঁদের বক্তব্য লিখিতভাবে আমাদের জানিয়ে দিতে। আমরা চিকিৎসকদের সেই বক্তব্য স্বাস্থ্যভবনে পাঠিয়ে দেব। ফোনকল বা ভিডিও কলের মাধ্যমে পরিষেবা দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে নির্দেশিকা রয়েছে, তাতে স্পষ্ট বলা হয়েছে ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ করতে হবে।
সম্প্রতি জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতালে চিকিৎসা সহ বিভিন্ন পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ তোলেন রোগী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা। অভিযোগ উঠেছিল, চিকিৎসকরা কোভিড হাসপাতালে নির্দিষ্টভাবে প্রত্যেক রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন না। সিস্টার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর ভরসা করতে হচ্ছে রোগীদের। পাশাপাশি রোগীদের দেওয়া খাবারের গুণগতমান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এইসব বিষয়ে রোগীদের একটা অংশ নিজেরাই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেন। এরপরই ছয় অভিজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে টিম গড়ার কথা বলা হয়। ছয় সদস্যের চিকিৎসকদের এই টিমে দুজন বাদে বাকি সদস্যরা সকলেই বেসরকারি চিকিৎসা পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত। স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশের দাবি, শিলিগুড়িতে ইতিমধ্যে এই টিম যথেষ্ট সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে কোভিড হাসপাতালে ১১ জন চিকিৎসকের পাশাপাশি আরও আট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এসেছেন। বর্তমানে ১৯ জন চিকিৎসকের টিম নিয়ে লেভেল ফোর চালু করা হবে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন।