করোনার প্রতিষেধক করোনিল! ভুয়ো দাবিতে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা পতঞ্জলির
নিজেদের তৈরি ‘করোনিল’–কে করোনা (Corona) ভাইরাসের প্রতিষেধক দাবি করে লাভের মুখ দেখতে চেয়েছিল পতঞ্জলি। আর তাই বাবা রামদেবের সংস্থাকে দশ লক্ষ টাকা জরিমানা করল মাদ্রাজ হাই কোর্ট (Madras High Court)। শুধু তাই নয়, তাঁদের ওষুধে ‘করোনিল’ (Coronil) নামও ব্যবহার করতে পারবে না পতঞ্জলি আয়ুর্বেদ। বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আদালতের মতে, বাজারে আনার সময় এটিকে করোনা ভাইরাসের ওষুধ হিসাবে প্রচার করেছিল পতঞ্জলি। কিন্তু এখনও করোনার কোনও প্রতিকারের কথা জানা যায়নি। মূলত লাভের উদ্দেশ্যেই এই কাজ। রায়ে এমনটাই পর্যবেক্ষণ আদালতের। আর তাই করোনিল বিক্রি বন্ধের যে নির্দেশ জারি রয়েছে, তাতেও স্থগিতাদেশ দিল না আদালত।
চেন্নাইয়ের একটি সংস্থা পতঞ্জলির (Patanjali) করোনিল নামের ব্যবহারের বিরোধিতা করে আদালতে মামলা করেছিল। তাতে দাবি করা হয়েছিল, ১৯৯৩ সাল থেকে এই ট্রেডমার্কটি তাদের। ‘করোনিল-৯২ বি’ নামে তাদের একটি অম্ল-নিরোধক পণ্য রয়েছে যা শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। এটি ভারী যন্ত্র পরিষ্কার করার কাজে লাগে এবং রাসায়নিক প্রস্তুতের কাজেও ব্যবহার করা হয়। ওই সংস্থা আরও জানিয়েছে যে, ২০২৭ সাল পর্যন্ত এই ট্রেডমার্ক তাদের। ১০৪ পাতার রায় পড়ার সময় পতঞ্জলির সমালোচনাও করেন বিচারক সিভি কার্তিকেয়ন। বলেন, ‘‘পতঞ্জলি দাবি করে, তাঁরা নাকি ১০ হাজার কোটি টাকার সংস্থা। অথচ সাধারণ মানুষের মনে করোনা নিয়ে যে ভয় ও আতঙ্ক রয়েছে তা কাজে লাগিয়ে পতঞ্জলি লাভের পিছনেই ছুটে চলেছে। করোনাভাইরাসের ওষুধ বলে যেটি তাঁরা দাবি করে, আসলে সেই করোনিল ট্যাবলেটটি করোনা নিরাময় করতে পারে না। এটি শুধুমাত্র সর্দি, কাশি ও জ্বরের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।’’ তিনি আরও বলেন, ট্রেড মার্ক রেজিস্ট্রি অফিস থেকে অতি সহজেই যাচাই করে নেওয়া যেত এই নামে কোনও ট্রেড মার্ক রয়েছে কিনা। যদি তারা তা যাচাই না করে থাকে বা যাচাই করার পরেও এই নাম ব্যবহার করে থাকে তা হলে কোনও ভাবেই তা বিবেচনা করা চলে না। এরপরই রায় দেওয়ার সময় বিচারপতি সিভি কার্তিকেয়ন তাদের ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেন।
আদালত আরও জানিয়েছে জরিমানার টাকা ২১ অগস্টের মধ্যে আদিয়ার ক্যানসার রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং অরুম্বক্কমের গভর্নমেন্ট যোগা অ্যান্ড নেচারোপ্যাথি মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের মধ্যে সমান ভাগে ভাগ করে দিতে হবে। এর আগে গত ১৭ জুলাই মাদ্রাজ হাইকোর্ট পতঞ্জলি আয়ুর্বেদকে এই ট্রেডমার্ক ব্যবহার করতে নিষেধ করে অন্তর্বর্তী রায় দিয়েছিল এক পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই।