মমতার দ্বারস্থ বাংলার পড়ুয়ারা
ট্রেন চলছে না, বিমানও হাতে গোনা। এই অবস্থায় তড়িঘড়ি ছাত্রছাত্রীদের হস্টেলে ডেকে পাঠাল কর্ণাটকের একটি মেডিক্যাল ও নার্সিং বিশ্ববিদ্যালয়। ২ সেপ্টেম্বর থেকে সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা দিতে হবে, তাই এই তলব। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মেল করে জানিয়েছেন তাঁদের সমস্যার কথা। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে রয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। তাঁদের সমস্যা আরও বেশি। সিকিমের ছাত্র-ছাত্রছাত্রীরা বাগডোগরা এয়ারপোর্টের উপরেই অনেকটা নির্ভরশীল। সেখান থেকে আরও কম ফ্লাইট থাকায়, তাঁরাও বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠিয়ে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানাচ্ছেন বলে খবর। শুধুমাত্র বিমানের সংখ্যা কম হওয়াটাই সমস্যা নয়, এখন ভাড়াও অনেক বেশি। বাংলার যে ছাত্রছাত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন, তাঁদের বক্তব্য হল, খুবই অল্প সময়ের নোটিসে তাঁদের বেঙ্গালুরু যেতে বলা হয়েছে। আর এর দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কোনওভাবেই নেবে না। বেঙ্গালুরুতে গিয়ে তাঁদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। কোভিড নেগেটিভ ছাড়পত্র থাকলেই পরীক্ষায় বসা যাবে। কিন্তু এই যাতায়াতে কারও যদি কোভিড পজিটিভ আসে, তার দায় কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না। কোভিড আক্রান্তকে নিজের উদ্যোগে চিকিৎসা করাতে হবে।
নার্সিংয়ের এক ছাত্রী লিখেছেন, আমাদের কলেজে একটাই ক্যান্টিন, তাতে স্থানাভাব রয়েছে। শৌচাগারও কমন। আর হস্টেলেও গাদাগাদি করে থাকাটা নিরাপদ নয়। আরেক ছাত্র লিখেছেন, বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকার দায়িত্ব কলেজ নেবে না। প্রত্যেকদিন ১০০০ টাকা খরচ করে নিজের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এটা তাঁর পক্ষে খুবই কঠিন। তাঁরা সবাই চাইছেন, সমস্ত বর্ষের সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা বাতিল করে ছাত্রছাত্রীদের পাশ করিয়ে দেওয়া হোক। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী কথা বলুন কর্ণাটক সরকারের সঙ্গে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলেছে, অনেকবার এই পরীক্ষা পিছানোর পরে আর কিছু করা সম্ভব নয়। পরীক্ষা না নিয়ে কাউকে পাশ করানো যাবে না। যদি কারও আপত্তি থাকে, তাহলে সে একটি বছর নষ্ট করতে পারে। প্রসঙ্গত, মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়াও সম্প্রতি জানিয়ে দিয়েছে, পরীক্ষা না নিয়ে কাউকে পাশ করানো হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে সেটা মাথায় রেখেই এগতে হচ্ছে।