দেশ বিভাগে ফিরে যান

দুই শ্রেণীর নাগরিকের পথে অসম? বিতর্ক

August 12, 2020 | 2 min read

অসম চুক্তির ষষ্ঠ দফার রূপায়ণের জন্য কেন্দ্রের গড়া দেওয়া উচ্চপর্যায়ের কমিটি তাদের সুপারিশ ও প্রতিবেদন মুখ্যমন্ত্রী মারফত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে জমা দেওয়ার পরে পাঁচ মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু অবিলম্বে কার্যকর করা দূরের কথা, প্রতিবেদন হিমঘরে পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এই অভিযোগ তুলে, সেই ‘গোপন’ রিপোর্ট আজ প্রকাশ করে দিলেন কমিটির সদস্য আসু নেতারা ও অরুণাচলের অ্যাডভোকেট জেনারেল নিলয় দত্ত। আসু বলে, কেন্দ্রের গাফিলতির কারণে মানুষ তাঁদের ভুল বুঝছে। অসমিয়াদের আইনি, সাংবিধানিক ও প্রশাসনিক রক্ষাকবচ নিশ্চিত করতে কমিটি কী কী সুপারিশ করেছে— তা জানার অধিকার অসমের মানুষের আছে।

কী আছে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি বি কে শর্মার নেতৃত্বাধীন কমিটির সুপারিশে? ১৯৭১ সালের পরে আসা চিহ্নিত বাংলাদেশিদের সীমান্ত পার করানোর প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অসমের বাইরে কোথাও রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে কমিটি। অসম চুক্তি অনুযায়ীই ভূমিপুত্র অসমিয়ার পাশাপাশি ভূমিপুত্র জনজাতি ও অন্যান্য ভুমিপুত্র সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছে কমিটি। কিন্তু তাদের সুপারিশ— অসমিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণের ভিত্তিবর্ষ হোক ১৯৫১ সালের ১ জানুয়ারি। 

গ্রামসভা, পুরসভা, বিধানসভা থেকে সংসদে ৮০-১০০ শতাংশ আসন ভূমিপুত্রদের জন্য সংরক্ষণ করা, ১০০ শতাংশ ভূমিপুত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে বিধান পরিষদ গঠন করা, অসমে ইনারলাইন পারমিট চালু করার কথা সুপারিশের তালিকায় রয়েছে। 

১৯৭১ সালের পরে আসা চিহ্নিত বাংলাদেশিদের সীমান্ত পার করানোর প্রক্রিয়া শেষ না-হওয়া পর্যন্ত তাঁদের অসমের বাইরে কোথাও রাখার ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে কমিটি। বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার, আধা কেন্দ্রীয় সরকারি,  অধিগৃহীত সংস্থার চাকরি ক্ষেত্র, রাজ্য সরকারের দফতর, অধীনস্থ দফতর ও বেসরকারি অফিসগুলিতে তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ভূমিপুত্রদের জন্য ৮০-১০০ শতাংশ সংরক্ষণ রাখতে হবে। 

সুপারিশে আছে, শুধ ভূমিপুত্র অসমিয়া ও জনজাতিরাই জমির মালিকানা বা জমি কেনাবেচার অধিকার পাবে এমন এলাকা নির্দিষ্ট করে দেবে সরকার। চরগুলির জবরদখল হটাতে সমীক্ষা ও জরিপ চালিয়ে সেগুলি সরকারি জমি হিসেবে নথিভুক্ত করতে হবে। কমিটি বলছে, অসমিয়াকে রাজ্য জুড়ে সরকারি ভাষা হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। বরাক, পার্বত্য জেলা ও বড়োভূমিতে স্থানীয় ভাষা ব্যবহারের সুযোগ রাখা হবে। 

এ দিকে অসম ইনারলাইন পারমিট চালু করার বিষয়টি নিয়ে অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদ ও তাই আহোম ছাত্র সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে যে আবেদন জানায়, সেই শুনানি গ্রহণ করে আজ প্রধান বিচারপতি শারদ অরবিন্দ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ কেন্দ্রকে দুই সপ্তাহের মধ্যে মতামত দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানান, এই ভাবে সংবেদনশীল সুপারিশগুলি আগেভাগে প্রকাশ করে দেওয়া দুর্ভাগ্যজনক। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার অসম চুক্তি রূপায়ণে ও রাজ্যকে বিদেশিমুক্ত করতে দায়বদ্ধ ও আন্তরিক। করোনা, বন্যায় বিপর্যস্ত রাজ্য। তার পরেও রাজ্য ও কেন্দ্র কমিটির সুপারিশগুলি কার্যকর করতে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু সময় বেঁধে রূপায়ণ সম্ভব নয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#assam, #Assam Accord, #Bangladeshis

আরো দেখুন