ঘুরে আসুন নবদ্বীপ-মায়াপুর
নদীয়া জেলায় ভাগীরথীর পশ্চিম পাড়ে অবস্থিত নবদ্বীপ। ভাগীরথী ও জলঙ্গীর সংযোগস্থলে অবস্থিত মায়াপুর। মূলত শ্রী চৈতন্য দেব ও ইসকন চন্দ্রোদয় মন্দিরের জন্য বিখ্যাত এই দুই স্থান। শ্রী চৈতন্য দেবের ভক্তদের কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। তবে যে কেউ এখানে ঘুরবার জন্য আসতে পারে। সকল ধর্মের মানুষের অবাধ প্রবেশ আছে ইস্কন চন্দ্রোদয় মন্দিরে।
কি কি দেখবেন
যে ইস্কন মন্দিরের দৌলতে মায়াপুরের আজ জগৎজোড়া নাম সেই মন্দির দিয়ে শুরু করুন গৌরতীর্থ মায়াপুর দর্শন। প্রথমে চন্দ্রোদয় মন্দির। মনোহর বাগিচা পেরিয়ে মন্দির। সেখানে শ্রীকৃষ্ণের জীবন আখ্যান প্রদর্শিত। ইস্কন মন্দিরের মূল ফটকের ডাইনে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রীপ্রভুপাদের বর্ণাঢ্য স্মৃতিমন্দির।
ইস্কন মন্দির থেকে বেরিয়ে শ্রীচৈতন্য গৌড়ীয় মঠ। এর পর অদ্বৈত ভবন, ২৯ চুড়োর শ্রীচৈতন্য মঠ এবং শ্রীবাস অঙ্গন তথা খোল ভাঙার ডাঙা। রয়েছে ভক্তি সারঙ্গ গোস্বামী মহারাজ মঠ, জন্মভিটে তথা শ্রীমন্দির। ২৯ চুড়োর মঠের উল্টো দিকে পুণ্যিপুকুর শ্যামকুণ্ড, একই চত্বরে রাধাকুণ্ড ইত্যাদি।
নবদ্বীপ জুড়ে একের পর এক মন্দির আর মঠের সারি। রিকশা ভাড়া করে বা পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায় মন্দিরগুলি। মহাপ্রভুর বিগ্রহ মন্দির, বুড়ো শিব, হরিসভা, পোড়ামাতলা মহাপ্রভু মন্দির, অদ্বৈতপ্রভু মন্দির, জগাই-মাধাই, শচীমাতা-বিষ্ণুপ্রিয়ার জন্মভিটায় নিত্যানন্দপ্রভুর মন্দির, বড় আখাড়া, শ্রীশ্রী গোবিন্দজিউ, সোনার গৌরাঙ্গ, সমাজবাড়ি, বড় রাধেশ্যাম, রাধাবাজারে শ্রীসারস্বত গৌড়ীয় আসন, দেবানন্দ গৌড়ীয় মঠ, মণিপুর পাড়ায় সোনার গৌরাঙ্গ, ইত্যাদি।
কিভাবে যাবেন
ট্রেন: হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে কাটোয়া লোকাল ধরে চলে আসুন বিষ্ণুপ্রিয়া হল্টে। সেখান থেকে টোটো পেয়ে যাবেন গঙ্গার ঘাটে যাবার জন্য। মায়াপুর ঘাট থেকে আবার টোটো করে পৌঁছে যাবেন মন্দিরে। এছাড়া, আপনি কৃষ্ণনগর লোকাল ধরে চলে আসতে পারেন। কৃষ্ণনগর স্টেশন থেকে অটো, টোটো বা বাস ধরে চলে আসুন নবদ্বীপঘাট। জলঙ্গি নদীর খেয়া পার হয়ে আবার টোটো ধরে পৌঁছে যান মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে।
বাস: কলকাতা থেকে অনেক বাস আছে সরাসরি মায়াপুরের। ইস্কনের বাস ও আছে সরাসরি কলকাতা থেকে। সকালে এসে রাতে ফিরতে পারেন। তাছাড়া প্রাইভেট বাসে করে চলে আসুন কৃষ্ণনগর শহরে তার পর মায়াপুরের বাস ধরে সোজা চলে যান ইস্কন মন্দিরে। নবদ্বীপে যাবার জন্য খেয়া পার করুন ।
গাড়িতে: কলকাতা থেকে মায়াপুরের সড়ক পথে দুরুত্ব ১৩০ কিলোমিটার। গাড়িতে করে ন্যাশনাল হাইওয়ে ৩৪ ধরে রানাঘাট ও কৃষ্ণনগর পার করে ৩:৩০-৪:০০ ঘন্টায় পৌঁছে যাবেন মায়াপুরে। মায়াপুর ইস্কন মন্দিরে গাড়ি রাখার সুবন্দোবস্ত আছে।